সুনামগঞ্জে একের পর এক ডুবছে হাওর
উজানের ঢালে ভেঙে যাচ্ছে ফসলরক্ষা বাঁধ
সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীসহ আশপাশের নদীর পানির উচ্চতা কমে আসা শুরু হলেও জেলার ভাটিতে একের পর এক হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) বিকেল থেকে দিরাইয়ে বাঁধ ভেঙে টাংনির হাওরের ফসল ডুবে গেছে। এরআগে শাল্লার ছায়ার হাওরে সাউরি কান্দা বাঁধের নিচ দিয়ে পানি ঢোকে। ধর্মপাশার গুরমার হাওরের বাঁধের নিচ দিয়েও পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
উজান থেকে (ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জি) নেমে আসা ঢলের পানিতে গত চারদিন ধরে সুনামগঞ্জের ছোট-বড় প্রায় দেড়শ ফসলি হাওর হুমকিতে পড়েছে। সোমবার ও মঙ্গলবার কোথাও নদীর পানি উঠে, আবার কোথাও বাঁধ ভেঙে আটটি হাওর ডুবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুধবার বিকেলে জেলার দিরাই উপজেলার ডালিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে টাংনির হাওরে পানি ঢোকা শুরু হয়।

কৃষকরা বলছেন, বাঁধ ঠেকানো না গেলে কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামের হাওর ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় শাল্লার জোয়ারিয়া ও গোপহরি হাওরে পানি ঢোকে। হাওরের পাশের দাড়াইন নদীর পানি ঢুকে এই দুই ছোট হাওর ডুবে যায়।
বুধবার সকালে জেলার তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার ভেতরের গনিয়াকুড়ি হাওর ডুবে যায়। স্থানীয় কৃষকরা জানান, হাওরের দুই হাজার একরের মতো ফসলি জমি ডুবে গেছে।

টাংনির হাওরের কৃষক শান্ত মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে গ্রামের কৃষকরা মিলে বাঁধটি রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বিকেলে বাঁধটি ভেঙে হাওরে পানি ঢোকা শুরু হয়। এতে আমার সব ধানক্ষেত তলিয়ে যায়।’
জোয়ারিয়া ও গোপহরি হাওরের কৃষক মনু মিয়া ও জুনেদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘এত কষ্টের ফলানো ফসল পানিতে তলিয়ে গেলো। আগামীতে আর বোরো ফসল করবো। এর চেয়ে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করবো।’

গনিয়াকুড়ি হাওর কৃষক সুলতান মিয়া বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে যদি বাঁধের কাজ শুরু হতো তাহলে আজ আমাদের ফসল তলিয়ে যেতো না। পিআইসিদের (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) কাজের গাফিলতির কারণে একে একে সব হাওর তলিয়ে যাচ্ছে।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কৃষকদের সহায়তায় বাঁধ রক্ষা করে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।
লিপসন আহমেদ/এসআর/এএসএম