রাঙ্গামাটিতে বৈসাবি বরণে বর্ণিল শোভাযাত্রা

আনন্দ ও উন্মাদনায় রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত হলো বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। প্রতিবছর এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে মূলত বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পাহাড়িরা এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসা নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরেন।

শোভাযাত্রায় বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক গায়ে দিয়ে তাদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন। আনন্দ-আমেজে বৈসাবির উপলক্ষ সবার কাছে পৌঁছে দেয় এই শোভাযাত্রা।

রোববার সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে রাঙ্গামাটি বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)।

রাঙ্গামাটি বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, সাংক্রান, বিষু, বিহু উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, জাবারংয়ের নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক পঞ্চানন ভট্টাচার্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজীব চাকমাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেন, চুক্তির ২৫ বছর পরও এখনো পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের মানুষ হতাশা, গ্লানি নিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করছে। যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল আজো সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়ায় জুম্ম জনগণের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

এ সময় বক্তারা দেশবাসীকে বর্ষবরণ ও বিদায়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম সংস্কৃতি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং একইসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। আনন্দ উচ্ছ্বাসের এই সময়েও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে উৎসব পালন করতে হয় বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।

এ সময় রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে পাহাড়িদের ঐহিত্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।

শংকর হোড়/এফএ/এমএস