ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দেশের বাইরেও চাহিদা রয়েছে তেঁতুলিয়ার টুপির

সফিকুল আলম | পঞ্চগড় | প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২২

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরে ঢোকার প্রায় চার কিলোমিটার আগেই আজিজনগর ও মাথাফাটা গ্রাম। ছায়াঘেরা নিবিড় এই পল্লিতে প্রায় ২০ বছর আগে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু হয় টুপি তৈরির কাজ। একপর্যায়ে কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২-১৪টিতে।

তেঁতুলিয়ার টুপির চাহিদাও ছিল। খুচরা ও পাইকারি বিক্রির পাশাপাশি ঢাকার বাইতুল মোকাররম মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে টুপি পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার এবং দুবাইয়ে বিক্রি হতো। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে বেশিরভাগ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

jagonews24

করোনার ধকল কাটিয়ে বর্তমানে তেঁতুলিয়া উপজেলায় দুটি টুপি কারখানা চালু আছে। এর মধ্যে একটি মেসার্স আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ। ঈদ সামনে রেখে বিগত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে টুপি উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে কারখানাটি।

বুধবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিন তেঁতুলিয়া উপজেলার মাথাফাটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মেসার্স আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার কারিগররা টুপি বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারখানাটিতে এক সময় ১৫টি মেশিন চালু থাকলেও বর্তমানে ৮টি মেশিনে টুপি তৈরির কাজ অব্যাহত রয়েছে।

jagonews24

কারখানার শ্রমিক আনোয়ারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত কারখানায় কাজ করছি। পাশেই কারখানাটি হওয়ায় আমাদের জন্য এখানে কাজ করা সুবিধাজনক। মাসে ৮-৯ হাজার টাকা আয় হচ্ছে আমার।’

একসময় টুপি কারখানায় কাজ করতেন উম্মে কুলছুম। তার কারখানাটি বন্ধ থাকায় তার কাজও বন্ধ রয়েছে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার স্বামী সুরুজ মিয়াসহ টুপি কারখানায় কাজ করতাম। সাত বছরের বেশি সময় টুপি কারিগর হিসেবে কাজ করেছি। প্রতি মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হতো। কিন্তু করোনার কারণে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এখন বেকার বসে আছি।’

jagonews24

বর্তমানে চালু মেসার্স আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী মো. হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কারখানার টুপি দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হতো। দেশের বাইরে সৌদি আবর, কুয়েত, পাকিস্তান, কাতার, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও বিক্রি হতো। কিন্তু করোনার কারণে অনেক কারখানা টুপি বিক্রি করতে পারেনি। এজন্য অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। আমি কোনোমতে টুপি কারখানাটি চালু রেখেছি। এখনো আমাদের টুপির চাহিদা রয়েছে।’

পবিত্র রমজান আর ঈদের এই সময়ে আমাদের গ্রামে দিনরাত কাজ হতো। এখন আমার কারখানা অর্ধেক শ্রমিক দিয়ে চলছে। শ্রমিকদের অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছেন। এজন্য নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে শেখানো হচ্ছে। আমি আবারও টুপি উৎপাদন এবং বিক্রি চালু শুরু করেছি।

jagonews24

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমার কারখানার কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমরা সরাসরি দেশের বাইরে টুপি বিক্রি করতে পারি না। ঢাকার ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আমাদের তেঁতুলিয়ার টুপি দেশের বাইরে বিক্রি হয়।’

তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলু বলেন, আজিজনগর ও মাথাফাটা টুপিপল্লির বিভিন্ন কারখানায় অনেক শ্রমিক কাজ করতেন। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে কারখানা টিকিয়ে রাখা যায়নি। আবারও কোনো কারখানা চালু করতে চাইলে উপজেলা প্রশাসন থেকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে।

সফিকুল আলম/এসআর/জিকেএস