নড়াইলে অসহায় কৃষকদের ধান কেটে দিলেন শিক্ষার্থীরা
কৃষকের ধান কাটছেন গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
নড়াইলে অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত তিনদিনে তারা ক্ষেত থেকে অন্তত ১৫ বিঘা ধান কেটে কৃষকের বাড়ি তুলে দিয়েছেন। এমন উদ্যোগে প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
ওই স্কুলের একাধিক শিক্ষকসহ স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ রেখে বিদ্যালয়ের ৩১৫ জন শিক্ষার্থী ১১টি সেক্টরে ভাগ হয়ে শুক্রবার থেকে অসহায় কৃষকদের ধান কাটা শুরু করেন। প্রতিদিন ২০ জন কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন তারা।

গুয়াখোলা গ্রামের প্রতাপ কুমার পাল জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে আমার ৬০ শতক ধান ১০ মিনিটে কেটে দিয়েছেন। অর্থের অভাবে আমি ধান কাটার জন্য শ্রমিক নিতে পারছিলাম না।
ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌমিত্র গোস্বামী বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে কৃষকের ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা অসহায় সেসব কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে ধান কেটে কৃষকের বাড়ি তুলে দিচ্ছি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বপন কুমার সেন বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অধিকাংশ জমিতে পানি জমে গেছে। এতে করে ক্ষেতে কৃষকদের ধান নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য আমরা অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, বোরো ধানের ভরা মওসুমে শ্রমিক সংকট চলছে। পাশাপাশি ‘অশনি’র প্রভাবে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পানি জমে অনেক ধানক্ষেত নষ্ট
হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিই এলাকার গরিব কৃষকদের ধান কেটে দিবো। টানা তিনদিন আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসহায় কৃষকদের ধান কেটে দিয়েছেন।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এবার ৪৮
হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে। সময় মতো বীজ, সারসহ অন্যান্য উপকরণ পাওয়ায় ধান চাষে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি।
হাফিজুল নিলু/আরএইচ/জিকেএস