ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় চাষ হচ্ছে সৌদি আরবের খেজুর

জেলা প্রতিনিধি | গাইবান্ধা | প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ১২ জুন ২০২২

বাজারে সৌদি আরবের খেজুর খেয়ে সেই বীজ সংরক্ষণ করে প্রথমে বপন করেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের জাহিদুল ইসলাম। সেই থেকে শুরু। এরপর হজে গিয়ে সেখান থেকেও আজওয়া, খোরমা, বারিহী, মরিয়মসহ কয়েক জাতের খেজুর গাছের চারা আনেন তিনি। খেজুরের বাগানের পাশাপাশি ১৮ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলের বাগান ও নার্সারি করেছেন জাহিদুল ইসলাম।

ইতোমধ্যে তার খেজুর বাগানের গাছে দেখা দিয়েছে ফলন। খেজুর গাছের চারা বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী।

Gaibandha-(4).jpg

শনিবার (১১ জুন) সরেজমিনে জাহিদুল ইসলামের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১২ জন যুবক বাগান পরিচর্যা করছেন। গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে সৌদি আরবের খেজুর। তার এই খেজুর বাগান ও নার্সারি দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ভিড় করছে।

৩৫ বছর আগে উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ছয়ঘড়িয়া গ্রামে প্রথমে ২০ শতক জমিতে ২০-২৫টি চারা দিয়ে নার্সারি শুরু করেন জাহিদুল ইসলাম। স্ত্রী নার্গিসের নামেই বাগানের নাম দেন ‘নার্গিস নার্সারি’। পরবর্তীতে তিনি সৌদি আরবে পবিত্র হজে গিয়ে খেজুরের চারা সংগ্রহ করে দেশে ফিরে তিন বিঘা জমিতে খেজুরের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানে ২৪৯টি খেজুরের গাছ রয়েছে।

কয়েক বছর ফল না হলেও এখন ধীরে ধীরে ফল আসতে শুরু করেছে তার বাগানে। আগের বছরগুলোর চেয়ে এবার বাগানে বেশি খেজুর ধরেছে। সাধারণত মাঘ মাস থেকে গাছে মুকুল আসতে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত আসে। দেশি খেজুর ও চারার চেয়ে সৌদি আরবের এই খেজুরের চাহিদা অনেক বেশি বলেও জানালেন তিনি।

Gaibandha-(4).jpg

বাগানে ঘুরতে ঘুরতে জাহিদুল বলেন, এ পর্যন্ত বাগান করতে তার ২৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বীজ ও কলমের চারা গাছ ৩শ থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। কয়েক বছর থেকে চারা গাছের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাগান থেকে প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা আয় করছেন জাহিদুল ইসলাম। ছোট বড় সব মিলে বাগানে প্রায় ২ হাজারেও বেশি চারা গাছ রয়েছে। প্রতিটি চারা গাছের বাজার মূল্য ২ হাজার টাকা ধরে হিসাব করলে ৪ কোটি টাকার চারা বিক্রি করা যাবে।

তিনি বলেন, এক সময় আমার নার্সারিতে যারা পরিচর্যার কাজ করতো তারা এখন একটি করে বাগানের মালিক। শ্রমিকের কাজ আর তাদের করতে হয় না। পর্যায়ক্রমে ৩০ জন যুবক নিজেই নার্সারি দিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে নার্সারি করে বেকারত্ব দূর করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

Gaibandha-(4).jpg

এদিকে ইব্রাহীম নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলা থেকে জাহিদুল ইসলামের নার্সারিতে গাছের চারা নিতে এসেছি। দীর্ঘ ২০ বছর থেকে এখান থেকে চারা নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা করি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন, জাহিদুল ইসলাম একজন সফল চাষি। তিনি তার নার্সারিতে খেজুর চাষের পাশাপাশি বড় সুপারির চারা ও বিদেশি কয়েক জাতের আমও চাষ করছেন। কৃষি অফিস থেকে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি সঠিক পরিচর্যা করে তাহলে খেজুর ফল উৎপাদন করা সম্ভব। দেশের চাহিদা পূরণ হলে তিনি যদি বিদেশে বিক্রি করতে চান সেক্ষেত্রেও কৃষি অফিস তাকে সহযোগিতা করবে।

এফএ/এমএস