ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দুই ‘ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’ নিয়ে অস্থির যশোর শ্রমিক লীগ

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ১০:৩০ এএম, ২৮ জুন ২০২২

দুই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিয়ে যশোর জেলা শ্রমিক লীগে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সভাপতির দায়িত্ব পালন নিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতির দেওয়া এক চিঠি দেখিয়ে একটি পক্ষ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচন করেছে। অপরপক্ষ এটিকে অগঠনতান্ত্রিক বলে অভিযোগ করে পাল্টা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনীত করেছে। যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিয়ে এ বিরোধ কেন্দ্রীয় কমিটিকেও স্পর্শ করেছে।

যশোর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আজিজুর রহমানের মৃত্যুর পর সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। একটি পক্ষ সহসভাপতি জবেদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করে। তখন আরেকটি পক্ষ আরেক সহসভাপতি সাইফুর রহমানকে পাল্টা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দাবি করে।

এই অবস্থায় জবেদ আলীর পক্ষ নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে কেন্দ্রীয় সভাপতি (চলতি দায়িত্ব) নূর কুতুব আলম মান্নানের দ্বারস্থ হয়। তখন কেন্দ্রীয় সভাপতি সহসভাপতি জবেদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও নাছির উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চিঠি দেন।

কিন্তু অপর পক্ষের দাবি, শ্রমিক লীগের গঠনতন্ত্রের কোথাও ‘ভারপ্রাপ্ত’ সভাপতির কোনো পদ নেই। অথচ কেন্দ্রীয় সভাপতি সেই কাজটিই করেছে। শ্রমিক লীগের গঠনতন্ত্রের ১৫ (গ) ধারায় উল্লেখ রয়েছে,‘সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতির অনুপস্থিতিতে সহসভাপতিরা ক্রমানুসারে সভাপতির দায়িত্ব পালন করিবেন।’ একইভাবে গঠনতন্ত্রের ২০ ধারায় উল্লেখ রয়েছে,‘কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের কোনো পদ শূন্য হইলে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থনে কো-অপশনের মাধ্যমে উহা পূরণ করিতে পারবে।’

সাইফুর রহমান পক্ষের বক্তব্য, যেহেতু জেলা শ্রমিক লীগের জন্য আলাদা কোনো গঠনতন্ত্র নেই সেই কারণে মূল গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা পর্যায়ে শ্রমিক লীগ পরিচালিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কারো মৃত্যুতে শূন্যপদ পূরণে কার্যনির্বাহী কমিটির দুই তৃতীয়াংশের সমর্থনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা, কিন্তু সেটি মানা হয়নি। আবার সভাপতির অনুপস্থিতিতে সহসভাপতিরা ক্রমানুসারে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন উল্লেখ থাকলেও সেটিও মানেননি কেন্দ্রীয় সভাপতি।

একইভাবে জেলা শ্রমিক লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসাথে তাকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য ২০২১ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক বরাবর রেজুলেশন পাঠায় কার্যনির্বাহী কমিটি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি কেন্দ্র থেকে। কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নাছির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে দাবি সাইফুর রহমান গ্রুপের। এসব কারণে কেন্দ্রীয় সভাপতির এক চিঠিতে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে জেলা শ্রমিক লীগের দুই পক্ষ।

শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান বলেন, শ্রমিক লীগ চলবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। সভাপতি মারা গেলে কমিটির সিনিয়র সহসভাপতিই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হবে। ফলে গঠনতন্ত্র যা বলা আছে; সেইভাবে হয়েছে। গঠনতন্ত্রের বাইরে আমাদের কারো কিছু করার নেই। কেউ কেউ এটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কেএম আযম খসরুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি তার মতো করে একটি চিঠি দিয়েছেন। এ নিয়ে আমি গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। আমাদের সাংগঠনিক সমস্যা আমরাই নিরসন করবো।

মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম