ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কোরবানির পশুর হাটে

জেলা প্রতিনিধি | শেরপুর | প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ০৩ জুলাই ২০২২

শেরপুরে দফায় দফায় বাড়ছে গো-খাদ্যের দাম। একমাসে দুই দফার বন্যায় সপ্তাহের ব্যবধানে ২০-৫০ টাকা দাম বাড়ায় বেকায়দায় পড়েছেন জেলার খামামিরা। অনেক খামারি আগেভাগেই গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শেরপুরে বিপুলসংখ্যক গরু মোটাতাজা করেন খামারিরা। কিন্তু গো-খাদ্যের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। এজন্য খামারিরা গরুকে খাদ্য দেওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর পর যে গাভি এক কেজি দুধ দিতো, খাদ্য কমিয়ে দেওয়ায় দুধের উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। এতে লোকসানে পড়েছেন খামারিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় পাঁচটি উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ২০ হাজার খামার রয়েছে। এসব খামারিদের গরুকে খড় ও ঘাসের পাশাপাশি গমের ভুসি, খেসারির ভুসি, বুটের ভুসি, বুটের খোসাসহ বিভিন্ন ধরনের দানাদার খাদ্য খাওয়ানো হয়। কিন্তু গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সবধরনের গো-খাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ৫-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। বস্তাপ্রতি বেড়েছে ১৫০-৩০০ টাকা।

jagonews24

গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দুধ উৎপাদন ও পশু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বেড়েছে কৃষক ও খামারিদের। এতে গবাদি পশুপালনে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ১৩ হাজার ৬০৬টি মোটাতাজাকরণ খামার, ৫ হাজার ৮৭৭টি দুগ্ধ খামার ও ১৩৮টি মহিষের খামারে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০১টি গরু, ৫ হাজার ৬৬২টি মহিষ রয়েছে। কোরবানির ঈদে চাহিদার তুলনায় বেশি পশু থাকলেও শেষ সময়ে গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পশুর দামও চড়া।

দামবৃদ্ধির কারণে ফিড ও আনুষঙ্গিক খাদ্য দিতে না পেরে গরুকে খড় খাওয়াতে হচ্ছে বলে জানান খামারিদের অনেকে। তাদের অভিযোগ, দুধের দাম না বাড়লেও ২৫ কেজির বস্তা ফিডের দাম একমাসে ২০০ টাকা বেড়েছে। সরিষা ও তিলের খৈল, চালের খুদ, চিটাগুড়ের দামও কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে।

খামারিদের অভিযোগ, দুই থেকে তিনমাস আগে এক লিটার দুধের উৎপাদন খরচ ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাইকারি বাজারে দুধের দাম খুব একটা বাড়েনি। বর্তমানে খুচরা বাজারে এক লিটার দুধ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে তা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

jagonews24

ঝিনাইগাতী উপজেলার খামারি রহিম মুন্সি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে ঈদের পশুর দামও বাড়ছে। এটা ছাড়া খামারিদের করার কিছুই নেই। নয়তো লোকসান হয়ে যাচ্ছে খামারিদের।’

খামারি জুলফিকার হাসু বলেন, ‘একমাসে যেভাবে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে, সে হারে দুধের দাম বাড়েনি। তাতে এমনিতেই লসে পড়ে যাচ্ছি আমরা। অনেকেই দুধ বাজারে বিক্রিই বন্ধ করে দিয়েছেন।’

এ বিষযে শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল থাকার কারণে দেশের বাজারে গো-খাদ্যের মূল্যে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। এছাড়া বন্যার কারণেও কিছুটা দামের পার্থক্য দেখা দিয়েছে। ঈদ পরবর্তী সময়ে এই বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।

ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জিকেএস