এক্সপ্রেসওয়ের ওপরই থামছে বাস, ওঠানামা করছেন যাত্রীরা
ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে বাসে উঠে ঢাকা যাচ্ছেন যাত্রীরা। আবার ঢাকা থেকে যারা আসছেন তাদেরও একইভাবে এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে নামানো হচ্ছে। যাত্রী ওঠা-নামা করতে বিভিন্ন স্থানের যাত্রী ছাউনির পার্কিংয়ে গাড়ি না থামিয়ে মূল সড়কের ওপর থামানো হচ্ছে। এর ফলে একাধিক গাড়ি থেমে সড়কের অর্ধেক পথ আটকে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার শংকা। ইতোপূর্বে এক্সপ্রেসওয়েতে পেছন থেকে গাড়িকে ধাক্কা দেওয়ার একাধিক ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকায় যেতে গতি বেড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মানুষের। নৌপথের বিভীষিকা না থাকায় সকাল-বিকেল যেকোনো সময়ই এখন রাজধানীতে ছুটছেন সাধারণ মানুষ। আবার একইভাবে ফিরছেন বাড়িতেও। আগে শিমুলিয়া ঘাট থেকে যে গাড়িগুলো ঢাকায় যেত সেই গাড়িগুলো গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর পর্যন্ত যাচ্ছে। ভাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসগুলো ভাঙ্গার পর থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোল প্লাজা পর্যন্ত একাধিক স্থান থেকে যাত্রী নিয়ে থাকে। এর মধ্যে ভাঙ্গার মালিগ্রাম, পুলিয়া, শিবচরের সূর্যনগর, পাঁচ্চর উল্লেখযোগ্য।
এসব স্থানে যাত্রী ওঠানামা করানোর সময় বাসগুলো যত্রতত্র মহাসড়কের ওপরই থামাচ্ছে। বিশৃঙ্খলভাবে মহাসড়কের পর ভিড় করছে একাধিক বাস। ফলে সড়কে চলাচলকারী অন্য যেকোনো গাড়ির সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন স্থানীয় এবং ব্যক্তিগত যানবাহন চালকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর বাস স্ট্যান্ডে এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকাগামী লেনে বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠাচ্ছে। যাত্রী ছাউনির সামনে গাড়ি পার্কিং অংশে দুই-একটি বাস থাকলেও বেশিরভাগ বাসই সড়কের ওপর থেমে যাত্রী ওঠাচ্ছে। এক্ষেত্রে ঢাকাগামী ৭-৮টি বাস একত্রে সড়কের ওপর থামছে। ফলে সড়কের একমুখী লেনের বেশিরভাগ অংশ আটকে থাকছে গাড়িতে। সরাসরি ঢাকাগামী কোনো যানবাহন ওই অংশ অতিক্রম করতে গেলে হঠাৎ করেই গতি কমাতে হয়। এছাড়া সড়কের ওপর এভাবে যাত্রীদের ওঠানামার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সাধারণ যাত্রীরা জানান।
জানতে চাইলে ঢাকাগামী কয়েকটি বাসের চালক বলেন, যাত্রী ওঠানামার জন্য যাত্রী ছাউনির সামনে বেশি জায়গা নেই। তিন-চারটা গাড়ি সেখানে থাকতে পারে। কিন্তু যাত্রী ছাউনি থেকে ঢাকার যাত্রী তুলতে সব বাসেরই প্রতিযোগিতা থাকে। ভাঙ্গা বা দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো প্রায় একইসঙ্গে ৮-১০টি গাড়ি পাঁচ্চর যাত্রী ছাউনিসহ এক্সপ্রেসওয়ের বেশিরভাগ স্ট্যান্ডে চলে আসে। ফলে সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করানো ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তাছাড়া আমাদের নিজস্ব কাউন্টার না থাকায় এই সমস্যাটা বেশি হচ্ছে।
ঢাকাগামী পাঁচ্চর এলাকার যাত্রী মো. মিরাজ হোসেন বলেন, পাঁচ্চর যাত্রী ছাউনিতে দাঁড়ালে ঢাকাগামী প্রায় সব বাসই পাওয়া যায়। প্রতিদিন অনেক যাত্রী এখান থেকে বাসে ওঠে। যাত্রী ছাউনির সামনে একসঙ্গে অনেকগুলো গাড়ি থামে। বেশিরভাগ সড়কের ওপরই থামে। এক্ষেত্রে বেশ ঝুঁকি রয়েছে। কারণ পেছন থেকে দ্রুতগামী কোনো গাড়ির সঙ্গে ধাক্কাও লাগতে পারে। এরকম ঘটনা ঘটেছে কয়েকবার।
শিবচর হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের ওপর বাস রেখে যাত্রী ওঠানামার কারণে আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বাসকে মামলা দিয়েছি। তাদের সব সময় বিষয়টি বলেছি। সচেতন করে যাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের হাইওয়ে পুলিশের টিম এক্সপ্রেসওয়েতে সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছে।
নাসিরুল হক/এফএ/এমএস