ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধুঁকছে জামালপুরের সিনেমা হল, আসে না দর্শক

জেলা প্রতিনিধি | জামালপুর | প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২২

একসময় জামালপুরে ২০টির মতো সিনেমা হল ছিল। সুস্থ বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল এ হলগুলো। যেখানে সারাদিন চলতো সিনেমা। দর্শকের হৈ-হুল্লোড় একসময় জানান দিতো হলে চলছে নতুন কোনো ছবি।

তবে বর্তমানে আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না। এখন মোবাইলেই দেখা যায় সব কিছু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে মানুষ অধিক সময় ব্যয় করছেন। এছাড়া অশ্লীলতা, নকল কাহিনি আর পাইরেসিও হলবিমুখ করেছে দর্শকদের। কালের বিবর্তনে জৌলুশ হারিয়েছে সিনেমা হল।

সরেজমিন জেলার বেশ কয়েকটি সিনেমা হল ঘুরে দেখা যায়, জীর্ণশীর্ণ হল, দর্শক নেই। হলের সামনের দেওয়ালে দুই একটা পোস্টার জানান দিচ্ছে একসময় এখানে ভিড় জমে থাকতো দর্শকদের।

জেলা শহরে পাঁচটি সিনেমা হলের মধ্যে শুধু মনোয়ার সিনেমা হলের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া গেলেও বাকি চারটির অস্তিত্ব নেই। হলগুলো বাজার, দোকান, শপিংমলে পরিণত হয়েছে। জেলার অন্যান্য সিনেমা হলগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।

কথা হয় মেলান্দহ গোপিনগর নাংলা এলাকার আবুল কাশেমের সঙ্গে। তিনি অন্তরা সিনেমা হলের নিয়মিত দর্শক ছিলেন। তিনি বলেন, তাদের উপজেলায় চারটি সিনেমা হল ছিল। হলগুলো সবসময় দর্শকে কানায় কানায় পূর্ণ থাকতো। মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতো কখন নতুন ছবি আসে। কিন্তু এখন মোবাইল, ইন্টারনেটের কারণে মানুষ আর হলে আসে না। তারা এখন ১০-২০ টাকা খরচ করলেই ঘরে বসে সিনেমা দেখতে পারেন।

পাশে বসে আবুল কাশেমের কথা শুনছিলেন আব্দুল বারেক নামের সিনেমাপ্রেমী একজন দর্শক। তিনি বলেন, আগে তিনি প্রতিনিয়তই সিনেমা দেখতেন। তখন সিনেমাতে বোঝার মতো অনেক কিছু ছিল। কিন্তু এখন ছবির কাহিনি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে তা তিনি বুঝতে পারেন না। এছাড়া নেটেই এখন সবকিছু পাওয়া যায়।

সরিষাবাড়ি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম। তিনি প্রায় এক হাজারেও বেশি ছবি দেখেছেন হলে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘একসময় নতুন ছবি এলেই ছুটে যেতাম সিনেমা হলে। আগের ছবিগুলো ছিল সামাজিক। পরিবারের সবাই মিলে দেখতাম। এখন ছবিতে অশ্লীলতা থাকে। কাহিনিও নকল করা। এসব কারণে আমার মতো সব দর্শক হলবিমুখ হয়েছেন।’

জামালপুর পরিবেশ আন্দোলনের নেতা জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, একসময় মানুষ সুস্থ বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে সিনেমা হলগুলোকেই জানতো। তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে ইন্টারনেটের অবাধ বিচরণ মানুষকে হলবিমুখ করতে বাধ্য করেছে। তবে এখনো ভালো সিনেমা তৈরি হলে দর্শকরা সিনেমা হলে আসেন। দেশে ‘মনপুরা’, ‘হাওয়া’র মতো ছবি যত বেশি হবে মানুষ ততই হলমুখী হবেন।

এ বিষয়ে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, হলগুলো মূলত ব্যক্তি মালিকানাধীন। তারা যদি না চালান তাহলে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে তারা যদি কোনো ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা চান তাহলে আমরা সবধরনের সহযোগিতা করবো।

মো. নাসিম উদ্দিন/এসআর/এএসএম