এখনো স্বজনদের পাননি সুলতানা
স্বজনের খোঁজে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর নেদারল্যান্ডস থেকে চট্টগ্রামে ফেরা সুলতানা প্রায় এক সপ্তাহেও খুঁজে পাননি তার স্বজনদের কোনো চিহ্ন। একটি রেলস্টেশন আর তার পাশে ব্যস্ত বাজার- কেবল এইটুকু স্মৃতি নিয়েই তিনি ঘুরছেন স্বজনদের কারো দেখা পাওয়ার আশায়। তবে ১ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার পর এখনো পর্যন্ত তিনি স্বজনদের কাউকে খুঁজে বের করতে পারেননি।
১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ফেরার পর ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে নিজের নেদারল্যান্ডসে চলে যাওয়ার করুণ কাহিনী, দেশে ফেরার কথা সবাইকে জানান সুলতানা; যার বর্তমান নাম সুলতানা ফন দ্য লেস্ত।
শেকড়ের সন্ধানে নেদারল্যান্ডস থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসা সুলতানা শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে যান চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীর রেলস্টেশন এলাকা ঘুরে দেখতে। সেখানে তিনি মূলত যা খুঁজেছেন তা হলো- রেলস্টেশনের পাশে ব্যস্ত বাজার। বিকেল পর্যন্ত সেখানে স্বজনদের কাউকে খুঁজে পা্ওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিকেলে আবার ফিরে যান চট্টগ্রাম শহরে।
সুলতানার দোহাজারীতে যাওয়ার খবরে স্থানীয়তা ভিড় জমান। অনেকেই নিজেকে সুলতানার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধির কাছে ছুটে যান।
সুলতানা জানিয়েছেন, ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি স্বজনদের খোঁজ করবেন। ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি নেদারল্যান্ডসের উদ্দেশে রওনা হবেন।
যেভাবে সুলতানার নেদারল্যান্ডস যাওয়া ও ফিরে আসা
১৯৭৫ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দোহাজারী ইউনিয়নে সুলতানার জন্ম। জন্মের পর মা-বাবা মারা যাওয়ায় দাদির আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। চার বছর পর দাদি তাকে ঢাকায় নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একটি শিশুকল্যাণ সংস্থার হাতে তুলে দেন। সেখান থেকে এক ডাচ দম্পতি তাকে দত্তক সন্তান হিসেবে নিয়ে নেদারল্যান্ডস চলে যান। সেখানেই ডাচ নাগরিক হিসেবে বড় হয়েছেন সুলতানা। দত্তক মা-বাবা তার নাম রাখেন সুলতানা ফন দ্য লেস্ত। নেদারল্যান্ডেই পড়ালেখা শেষ করে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা পেশা। বিয়ে করেছেন ডিজাইনার ইয়োরিস ইয়াকবসকে। দশ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে এই দম্পতির। সেই ছেলে আর স্বামীকে নিয়েই সুলতানা এসেছেন বাংলাদেশে।
দত্তক নেওয়ার সময় যে এফিডেভিট ছিল সেটি অনুযায়ী, সুলতানার দাদির নাম রহিমা খাতুন আর দাদার নাম মৃত কদম আলী।
জীবন মুছা/এনএফ/এবিএস