ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রাষ্ট্রপতির স্মৃতিফলক ভেঙে লেখা হলো র‌্যাব কর্মকর্তার নাম

প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলে দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের স্থাপিত মিলের উদ্বোধনী ভিত্তি ফলকটি ভেঙে ফেলেছে র‌্যাব। ওই স্থানে নতুন স্মৃতিফলক করে সেখানে মসজিদের উদ্বোধক হিসেবে লাগানো হয়েছে র‌্যাব কর্মকর্তার নাম।

এ ঘটনায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ দিকে খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফরউল্লাহ সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের অদূরে যশোদল এলাকায় স্থাপিত কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলটি বর্তমানে বন্ধ আছে। এটি র‌্যাব-১৪, ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি (সিপিসি) এর প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

kishoreganj-Folok

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ৫ মার্চ যশোদলে বাংলাদেশ ট্রেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রিত কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলস এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেসময়কার উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

পরে ১৫ আগষ্টের পর দেশের রাজনীতির পট পরিবর্তন হয়। মিলটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বিএনপি সরকারের আমলে এটি নাম মাত্র দামে বেসরকারি মালিকানায় বিক্রি করে দেয়া হয়। কিন্তু বেরকারি মালিকানাতেও মিলটি চালু করা হয়নি।

কয়েক বছর আগে কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইলস মিলের একাংশ ভাড়া নিয়ে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ এর প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়।

জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি মিলের ভেতর মসজিদের সামনে স্থাপিত সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভিত্তিফলকটি ভেঙে ফেলা হয়। ক্যাম্পের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার নিদের্শে এটি ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই স্থানে মসজিদের সামনে লাগানো হয় র‌্যাব-১৪ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রিয়াদুল ইসলামের নাম। এতে লেখা আছে ‘ ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২, র‌্যাব-১৪ এর অস্থায়ী কার্যালয় ও কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিলস জামে মসজিদ সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন, মেজর মো. রিয়াদুল ইসলাম।’ এতে তারিখ লেখা আছে ৫ ফেব্রুয়ারি।

এ ঘটনায় ওই ক্যাম্পের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ভিত্তিফলকটির স্থানে ইটের খোয়া পড়ে আছে। এ সময় ওই ক্যাম্পের ডিএডি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ভিত্তিপ্রস্তরটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় এটি ভেঙে ফেলা হয়। তবে এর পাথরটি খোলে রাখা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে এটি নতুন করে লাগানো হবে।

kishoreganj-Folok

সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাতিজা জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের আহ্বায়ক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, একজন জাতীয় নেতার স্মৃতি বিজরিত স্মৃতি ফলকটি ভেঙে ফেলার এখতিয়ার কারো নেই। বিএনপি, জাতীয়পার্টি কিংবা স্বাধীনতা বিরোধী সরকারের সময়েও এটিতে হাত দেয়ার সাহস দেখায়নি কেউ। অথচ একটি সুরক্ষিত বাহিনী কাউকে না বলে ফলকটি ভেঙে ফেলেছে। এতে আমরা চরম ক্ষুব্ধ। আমরা এর সুষ্টু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মেজর মো. রিয়াদুল ইসলাম বলেন, ভিত্তি ফলকটি কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে ভাঙা হয়নি। এটির বেইজমেন্ট ভেঙে গিয়েছিল। পাথরে শ্যাওলা পড়ে বিনস্টের পথে চলে গিয়েছিল। এটি নতুন করে স্থাপন করার জন্যই ভেঙে ফেলা হয়। এখানে অন্য কোনো বিষয় ছিলনা। বিষয়টিকে অহেতুক ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, আমি এখানে আসার পর মসজিদের ব্যাপক সংস্কার করেছি। তাই মসজিদের সংস্কার কাজের উদ্বোধক হিসেবে নিজের নাম লেখা হয়েছে।

নূর মোহাম্মদ/ এমএএস/পিআর