শীতের আগমনী বার্তায় লেপ-তোশক তৈরির হিড়িক
লেপ-তোষকের সব দোকানে ব্যস্ত সময় পাড় করছে কারিগররা
আসছে শীত। আর শীত উপলক্ষে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে দক্ষিণ উপকূলীয় জেলার ধুনকর (কারিগর) ও ব্যবসায়ীরা।
দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা আর ভোরে ঘাস, লতাপাতার ওপর জমে থাকা হালকা শিশির বিন্দু দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীত আসার আগেই সবাই প্রস্তুত হয় ঠান্ডা মোকাবিলার জন্য। ঝালকাঠিতে গত তিন চার দিন ধরে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত শেষে ভোরে আলো ফুটলেও কিছু স্থানে কুয়াশাচ্ছন্ন দেখা যায়। সঙ্গে হালকা শীত শীত অনুভব।
এরই মধ্যে হেমন্তের দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতের আগমনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা। কার্তিকের সকালে শীতের শুরু হলেও পৌষ ও মাঘ-এ দুই মাস শীত মৌসুম হিসেবে বিবেচিত।
এসময় ঝালকাঠি জেলার বাসিন্দারা শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে ভিড় করেন লেপ-তোষকের দোকানগুলোয়। এ কারণে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।
অন্যদিকে অনেক পরিবারের সদস্যরা তাদের উঠিয়ে রাখা লেপ-তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে নিউ ঝালকাঠি বেডিং স্টোর লেপ-তোষক তৈরি কারিগর হানিফ মোল্লা জানান, শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ক্রেতাদের এ আনাগোনা চলবে পুরো শীতজুড়ে। ঝালকাঠি শহরের কুমারপট্টি-ফরিয়া পট্টি সংযোগ সড়কে তুলাপট্টিতে গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোষকের সব দোকানে ছিল কারিগরদের ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার নিচ্ছেন। ক্রেতাদের বিভিন্ন রং-মানের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এ দৃশ্য চোখে পড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাটবাজারগুলোতেও। এ বিষয়ে লেপ-তোশক ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোষক তৈরির খরচ। এ বছর জিনিসপত্রের দাম অনেকটা বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই লেপ-তোশক তৈরিতে খরচ চারশত টাকা থেকে শুরু করে একহাজার টাকা পর্যন্ত। আর একটি লেপ- তোষক বিক্রি করলে তাদের ৩০০ থকে ৫০০ টাকা লাভ হয়।
আরেক ব্যবসায়ী শাহরিয়ার বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোশকের চাহিদা আরও বাড়বে। বর্তমানে বিকিকিনি ভালো। বাজারে লোক সমাগম রয়েছে। অনেকে আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোশক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন।
ব্যবসায়ী খালিদ বিন জেকি জানান, বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ-তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা করে দাম চলছে।
তিনি আরও বলেন, আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ৪০০ টাকা থেকেে এক হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে একটি ভালো মানের লেপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকা। এছাড়া ভালো মানের তোষক তৈরি করতে খরচ পড়ছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। গত বছর ভালো মানের লেপ তৈরিতে খরচ হয়েছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। আর তোষক তৈরিতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা।
আতিকুর রহমান/জেএস/জেআইএম