ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সুনামগঞ্জে পৃথক মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

জেলা প্রতিনিধি | সুনামগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ০৩ নভেম্বর ২০২২

সুনামগঞ্জে পৃথক মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন ও দুজনের ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন পৃথক তিনটি মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্র জানায়, জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দীগেন্দ্র বর্মণ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী একটি এনজিওতে চাকরি করতেন। ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট দুপুরে অফিসের কাজে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরে আসেন। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় আসামি আনোয়ার হোসেন জোর করে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে করে সীমান্তের শাহ্ আরেফিন মোকামের পাশে নিয়ে যান। পরে ভয় দেখিয়ে পাশের আখক্ষেতে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। এসময় হঠাৎ শয়ফুল্লাহ, সাইদুর রহমান ও শফিকুল তাদের ঘেরাও করে। একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন তারা। আসামি সেলিম, আনোয়ারুল আজিম আকাশ, মাফিনুর গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। পরে থানায় মামলা হয়। আসামি শফিকুল, শয়ফুল্লাহ ও ছাইদুর রহমান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। মামলা চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ আট সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্য প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে আদালত আনোয়ার হোসেন খোকন, শয়ফুল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিকুলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিল।

অন্যদিকে দুই বছর আগে দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার অপরাধীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর নিজ বাড়ি আসার সময় বাসে উঠেন। গাড়িটি দিরাই সড়কের মাথায় এলে তিনি বাস থেকে নামার চেষ্টা করেন। এসময় চালক শহিদ মিয়া কৌশলে তাকে নামতে না দিয়ে বাস চালাতে থাকে। ওই তরুণীকে পুনরায় দিরাই নিয়ে নামিয়ে দিবেন বলে চালক জানান। গাড়িটি কাঠইর ব্রিজ পার হওয়ার পর চালক হেলপারকে গাড়ি চালাতে দিয়ে তরুণীর পাশের সিটে বসে ধর্ষণচেষ্টা করেন। নিজেকে রক্ষায় তিনি গাড়ি থেকে লাফ দেন। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ঘটনায় মামলা হলে আসামি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। রাষ্ট্রপক্ষ ৯ সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্য প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে আদালত শহিদ মিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

jagonews24

সুনামগঞ্জের ছাতকের আরেকটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামের একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এসময় আরেক আসামি জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ইকবাল হোসেন ও জয়নাল আবেদীন এক তরুণীকে অপহরণ করে সিলেট নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে নির্যাতিতা থানায় গিয়ে মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় চার সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্য প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে আদালত আসামিদের এ সাজা দেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নান্টু রায় বললেন, তিনটি রায়েই রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। নির্যাতিতারা ন্যায় বিচার পেয়েছেন।

লিপসন আহমেদ/আরএইচ/জিকেএস