ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পাহাড়ের সুবিধাবঞ্চিত ২০ নারী পেলেন মোড়া তৈরির উপকরণ

জেলা প্রতিনিধি | খাগড়াছড়ি | প্রকাশিত: ০৯:৩৭ এএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা পৌরসভার কাজীপাড়ার বাসিন্দা মরিয়ম বিবি স্বামীকে হারিয়েছেন বেশ কয়েকবছর আগে। ছেলেরা বিয়ে করে যার যার মতো আলাদা থাকছেন। স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র ঘরেই জীবন কাটচ্ছে মরিয়মের। মোড়া তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

শুধু মরিয়ম নন, তার মতো মোড়া বিক্রি করে সংসার চলে স্বামী হারা বিবি ফাতেমা ও আনোয়ারা বেগমসহ বেশ কয়েকজন। কিন্তু অর্থ সংকটে মোড়া তৈরির উপকরণ কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

এমন পরিস্থিতিতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ২০ জন স্বামী হারা ও অসহায় সুবিধাবঞ্চিত নারীর প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌসী পারভীন।

মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে সুবিধাবঞ্চিত এসব নারীদের প্রত্যেককে ১০ জোড়া মোড়া তৈরির উপকরণ হিসেবে প্লাস্টিকের বেত (রগ) ও টায়ার দেন তিনি।

jagonews24

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে পাহাড়ের এসব সুবিধাবঞ্চিত নারীর মধ্যে উপকরণ তুলে দেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌসী পারভীন। একই দিন সকালের দিকে খাগড়াছড়ির ছেলাছড়া পাড়ায় পাহাড়ের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কোমর তাত বুননের জন্য সুতা দেন তিনি।

মোড়া তৈরির উপকরণ পেয়ে খুশি মরিয়ম বিবি। তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে মোড়া বিক্রির টাকাতেই নিজের ভরণ-পোষণ করছি। কিন্তু আর্থিক সংকটে মোড়া তৈরির উপকরণ কিনতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, ১০ জোড়া মোড় তৈরির উপকরণ পেয়েছি। এখন আমার একটা পুঁজি তৈরি হলো।

আকলিমা বেগম বলেন, আল্লাহ নিজেই আমাদের মতো গরীবদের জন্য তাকে সাহায্যের দূত হিসেবে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তাকে নেক হায়াত দান করুন।

কোমর তাঁত বোনার সুতা পেয়ে ইন্দ্রানী ত্রিপুরা বলেন, আগেও তিনি পাহাড়ি নারীদের সুতা দিয়েছেন। তারা অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছে। আমরাও তাদের মতো করে ঘুরে দাঁড়াবো।

সঞ্চিতা ত্রিপুরা বলেন, কাপড় বোনার সুতা দিয়ে ফেরদৌসী পারভীন আমাদের জন্য যা করলেন আজকের দুনিয়ায় কেউ কারও জন্য করে না। আমরা তার এ অবদান কখনো ভুলবো না।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আলাউদ্দিন লিটন বলেন, কোনো ধরনের স্বার্থ ছাড়াই মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে তার অনন্য উদাহরণ প্রফেসর ফেরদৌসী পারভীন। কারও আত্মীয়-স্বজন বা পূর্ব পরিচিত না হয়েও কর্মজীবী নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি মানবিক দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন।

সবসময়ই সুবিধা বঞ্চিত নারীদের পাশে থাকার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌসী পারভীন বলেন, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অসহায় নারীদের স্বাবলম্বী করতেই আমি নিজ উদ্যোগে এসব কাজ করছি। একাজে আমার কোনো স্বার্থ নেই। প্রান্তিক জনপদের নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতেই আমার এ প্রচেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, একজন নারী যদি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তাহলে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হবে। নারীরা উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ ও পরিবারে বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হবে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসজে/জিকেএস