সিত্রাংয়ের ক্ষতি পোষাতে ধানের দামের পানে চেয়ে কৃষক
ভোলায় এ বছর আমনের ব্যাপক ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষতি কাটাতে হিমসীম খাচ্ছেন তারা। তবে ধানের বাজারমূল্য বেশি পেলে ক্ষতি কাটিয়ে লাভবান হতে পারবেন কৃষকরা। যদিও কৃষি বিভাগের দাবি এ বছর আমন ধানের ফলন গত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সরকারিভাবে প্রণোদনা বিতরণ করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ভোলার সাত উপজেলায় আমন ধানের ব্যাপক সফল হয়েছে। মাঠে মাঠে পেকে রয়েছে সোনালী আমন ধান। কোনো কোনো মাঠে কৃষকরা দল বেঁধে উৎসাহ নিয়ে কাটছেন আমন ধান। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর আমন ধানের ব্যাপক ফলন হলেও হাসি নেই ভোলার কৃষকদের মুখে। অক্টোবরের শেষের দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে জেলার সাত উপজেলার ৩ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষকদের দাবি এবার আমন ধানের বাজারমূল্য ভালো পেলে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে অনেকটা লাভবান হবেন তারা।

ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তমুন্সি গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম ও মো. নাছির আহমেদ জানান, পৃথক পৃথকভাবে তারা দুই একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ক্ষেতে ধান অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু এই ফলনে তারা খুশি নয়। কারণ ঘূর্ণিঝড়ে তাদের ক্ষেতের ৩০-৪০ শতাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ধান কৃষি বিভাগের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো হয়েছে। এখন সেই ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো. হাসান জানান, গত বছর একর প্রতি ৩০-৩৫ মণ ধান পেয়েছেন। এবার ধান ভালো হয়েছে। এবার একর প্রতি ৪০-৫০ মণ পাবেন।

পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো. আবুল কাশেম ও মো. সামছুদ্দিন জানান, তারা ক্ষেত থেকে ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। বাজার দাম কেমন পাবেন তা এখনও নিশ্চিত নন তারা। এবার যদি তারা ১২-১৩শ’ টাকায় ধানের মণ বিক্রি করতে পারেন তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন।

ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসূল কবীর জানান, ভোলার সাত উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৭৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর জেলার আমনের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে কৃষকরা ভালো লাভবান হবেন। সরকারিভাবে প্রণোদনা পেলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে দেওয়া হবে।
এফএ/জেআইএম