ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বোরোর বীজতলায় শীতের হানা

এমদাদুল হক মিলন | প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২

দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষিতে। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় ইরি-বোরো বীজতলার চারা হলুদ ও লালচে রঙ ধারণ করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আলুক্ষেত নেট দিয়ে এবং ইরি-বোরো ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিনাজপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলায় এবার ৪৪ হাজার ৯৬৪ হেক্টর জমিতে আলু এবং ১ লাখ ৭১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ হয়েছে। যা এরই মধ্যে উত্তোলন ও বজারজাত শুরু হয়ে গেছে।

jagonews24

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৭১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবার ৯ হাজার ৪৩৭ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে।

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের মাতা সাগর, কৃষাণ বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় আক্রান্ত বীজতলার চারা হলুদ ও লালচে রঙ ধারণ করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় বীজতলা শীতে কুঁকড়ে গেছে।

জেলার সদর উপজেলার কৃষাণ বাজার এলাকার কৃষক মো. আবু সাইদ বলেন, এবার পৌষ মাসেই শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের কারণে বীজতলাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা বীজতলায় স্প্রে করছি, বীজতলার ওপর পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েও তা রক্ষা করতে পারছি না। এখন বীজতলার অবস্থা খুবই খারাপ। মাঘ মাসে শীত বাড়লে সামনে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

অপরদিকে বিরল উপজেলার তেঘরা, ঢেরাপাটিয়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আলু ক্ষেতের উপর সামিয়ানার মতো পলিথিন ও নেট টাঙিয়ে শীত থেকে আলুক্ষেত রক্ষা করা হচ্ছে। সামনে শীত আরও বাড়লে বীজের জন্য চাষ করা আলুতে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে বলে কৃষক মকবুল হোসেন জানান।

অন্যদিকে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইরি-বোরো বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। কুয়াশা থেকে রক্ষা করতে এই প্রক্রিয়া বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

jagonews24

জয়দেবপুর গ্রামের কৃষক মনসুর আলী বলেন, আগামী মাঘ মাসে ইরি-বোরা ধানের চারা রোপণ করবেন তিনি। এজন্য বীজতলায় বীজ বপন করেছেন। চারাও গজিয়েছে। কিন্তু শীতের কারণে বীজতলা কুঁকড়ে যাচ্ছে এবং কুয়াশ বেশি পড়লে চারা বাড়তে পারে না। সে কারণে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। পলিথিনের নিচে বীজতলায় সেচ দিতে হয়। এতে করে চারা যেমন দ্রুত বাড়ে, তেমনি কোনো বালাই আক্রমণ করতে পারে না।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জমান বলেন, বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এতে বীজতলা বা আলুর ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। আর যদি ঘন কুয়াশা দেখা দেয় এবং রোদ না ওঠে তাহলে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। সকালে কাপড় দিয়ে বা দড়ি টেনে জমে থাকা কুয়াশাকে মাটিতে ফেলে দিতে হবে। আর যদি একদমই রোদ না ওঠে বীজতলায় কিছুটা পানি ধরে রাখলে সুফল পাওয়া যাবে।

এফএ/জিকেএস