ভৈরবে ময়লায় ভরাট খাল, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ
ভৈরবে নির্দিষ্ট কোনো ভাগাড় না থাকায় ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হচ্ছে খাল। মেঘনা নদীর সংযোগস্থল খালটি অতিগুরুত্বপূর্ণ হলেও দিন দিন সেটি ময়লার নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান শহর রক্ষা বাঁধ রোডের পাশে পৌরসভার ময়লা ফেলার কারণে বিশালাকার খালটি দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ময়লার দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পরেছে পথচারীসহ যানবাহনচালকরা। দিন দিন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালে ভৈরব বাজার মালগুদাম সড়কে রেললাইন তুলে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের উদ্যোগে এ সড়কে একটি নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হয়। রাস্তাটির নামকরণ করা হয় জিল্লুর রহমান শহর রক্ষা বাঁধ রোড। এ রাস্তার পাশেই বিশাল খাল। এক সময় খরস্রোতা ছিল খালটি। কালের বিবর্তনে শহরের সব খাল-বিল দখল করে ভরাট করে ফেলছে দখলদাররা। এতে কমে গেছে খালটির গুরুত্ব। তবে বর্ষা মৌসুমে ঝড় তুফানের সময় এই খালে আশ্রয় নেয় লঞ্চ, কার্গো, ট্রলার। খালটি ভরাট হয়ে গেলে বর্ষাকালে বিপদে পড়বে নৌযানগুলো। এছাড়া শহরের অনেক খালের পানি সংযোগ লাইন এ খালে এসে মেঘনা নদীতে বিলীন হয়। ময়লা আবর্জনায় খালটি ভরাটের কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। একই সঙ্গে দুর্গন্ধের মধ্য চলাফেরা করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন পথচারীরা।

আরও পড়ুন: সড়কের পাশে ভাগাড়, দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ
সমাজকর্মী মো. নাজমুল হক বলেন, ভৈরব একটি বাণিজ্য এলাকা হওয়ায় আশেপাশের কয়েক জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকাযোগে অনেক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার কাজে ভৈরব বাজারে আসেন। বিশেষ করে বর্ষাকালে বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে বাঁচতে এ খালে নৌকাসহ তারা আশ্রয় নেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে পৌর শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ময়লা আবর্জনার এই খালে ফেলা হচ্ছে। যার ফলে দিন দিন খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। যদি খালটি ভরাট হয়ে যায় তাহলে ভৈরবের ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানান সমস্যা সৃষ্টি হবে।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই খালের সঙ্গে বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক রয়েছে। বর্ষাকালে লঞ্চ, কার্গো, ট্রলারগুলো ঝড় তুফানে খালে আশ্রয় নেয়। এই খাল ছাড়া ভৈরব বন্দরে আর কোনো খাল নেই। কিন্তু পৌর শহরের সব ময়লা আবর্জনা ফেলে দিন দিন খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পথচারী ও যানবাহনচালকরা ময়লা আবর্জনার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। পৌরসভার লোকজন প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে এই খালে ফেলে ভরাট করে ফেলছে। এ বিষয়ে পৌরসভাকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এ খালটি ভরাট না করতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: সড়কের পাশে ময়লার স্তূপ, পচা গন্ধে পথচারীদের চলাই দায়
এ বিষয়ে ভৈরব পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, পৌর শহরের ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। যার কারণে সুইপাররা খালে ময়লা ফেলতে বাধ্য হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করার জন্য খাস জমি বরাদ্দ পেতে ভূমি অফিসে আবেদন করেছি। কিন্তু তার পরও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। তবে শহরের ময়লা আবর্জনা ধ্বংস করতে আমরা একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। প্রজেক্টটি বাস্তবায়ন করা হলে শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধান হবে।
রাজীবুল হাসান/জেএস/জিকেএস