পঞ্চগড়ে পুরোহিত হত্যা : ৩ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার
ফাইল ছবি
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সন্ত গৌড়ীয় মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূলহোতাসহ আরও ৩ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃস্পতিবার রাতে দেবীগঞ্জের সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের কালিরডাঙ্গা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, দুইটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, তিনটি ছোরা ও তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাকেও গ্রেফতার করে।
শুক্রবার দুপুরে দেবীগঞ্জ থানায় পুলিশের রংপুর বিভাগের ডিআইজি হুমায়ুন কবির এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানায়। তবে তিনি তদন্তের স্বার্থে মূলহোতাসহ গ্রেফতাদের নাম জানাতে অস্বীকার করেছেন।
প্রেস ব্রিফিয়ে পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহাম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্বীন মোহাম্মদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) কফিল উদ্দিনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি হুমায়ুন কবির জানান, মঠের পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায় হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের করা হয়েছে। এই কিলিং মিশনের পরিকল্পনা এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জেলা এবং জেলার বাইরের আট জেমএমবি সদস্য জড়িত। এদের মধ্যে সরাসরি অংশ নেয়া তিনজনকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাপাতি দিয়ে যিনি পুরোহিতের গলা কেটেছেন তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্রের সঙ্গে একটি বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়। দুষ্কৃতিকারীদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি সনাক্ত করা হয়েছে। আশা করি, শিগগির সেটাও উদ্ধার করা হবে।
তিনি বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি নষ্ট করাই দুষ্কৃতিকারীর আসল উদ্দেশ্য ছিল। ঘটনার দিন রোববার রাতে খলিলুর রহমান ওরফে খলিল মুন্সি, জাহাঙ্গীর আলম ও বাবুল হোসেন নামে তিন জেমএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা বর্তমানে ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিশেষ অভিযান চালানো হয়। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার তিন জেএমবি সদস্যের মধ্যে একজনকে পাশের জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা সকলেই জেএমবির সক্রিয় সদস্য। কিলিং মিশনের পরিকল্পনা এবং নানাভাবে সহযোগিতায় অংশ নেয়া বাকি দুইজনকেও শিগগির গ্রেফতার করা হবে বলে দাবি করেন ডিআইজি হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, এরা শুধু দেবীগঞ্জের ঘটনা নয়, উত্তরাঞ্চেলের বিভিন্ন নাশকতামূলক হামলাতেও জড়িত। গ্রেফতার জেএমবি সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এখন সব তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
স্থানীয় সাংবাদিকরা গ্রেফতারদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে ডিআইজি হুমায়ুন কবির বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ছবি ও পরিচয় না দিতে হাইর্কোটের নির্দেশনা আছে। এজন্য আমরা তাদের গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে হাজির করিনি।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়ার পাশে শ্রীশ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের পুরোহিত মহারাজ জগেশ্বর রায়কে গলা কেটে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা। এ সময় গোপাল চন্দ্র রায় নামে এক পূজারি গুলিবিদ্ধ হয়। প্রথমে তাকে রংপুর মেডিকেল কালেজ হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
সফিকুল আলম/এসএস/পিআর