সাঁথিয়ায় কুকুর আতঙ্ক, জলাতঙ্কে আক্রান্ত ১

পাবনার সাঁথিয়ায় খবির উদ্দিন মোল্লা (৬০) নামের এক ব্যক্তি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের পুরাচর গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। এরআগে একই গ্রামের বাসিন্দা ও ওই রোগীর শ্যালক আব্দুল হাই গত ৩ মার্চ কুকুরের কামড়ে মারা যান।
সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জলাতঙ্ক রোগী শনাক্তের তিনদিন আগে শনিবার (২৪ মার্চ) সাঁথিয়ায় এক কুকুরের কামড়ে পাঁচ গ্রামের অর্ধশত মানুষ আহত হন। কিছু গ্রামে কুকুরের মড়কও দেখা দিয়েছে। এসব মিলিয়ে সাঁথিয়ায় কুকুর আতঙ্কে ভুগছেন লোকজন।
সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, দুই পা অবশ হয়ে যাওয়া, কিছুই খেতে না পারা, পানি দেখলে ভয় পাওয়া এবং অতিরিক্ত লালা বের হওয়া উপসর্গ নিয়ে শনিবার রাতে সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন খবির উদ্দিন।
আরও পড়ুন: পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত অর্ধশত
খবির উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন জানান, প্রায় দেড় মাস আগে তাকে কুকুর কামড় দিয়েছিল। তিনি কোনো ভ্যাকসিন না নিয়ে উপজেলার ফেঁচুয়ান গ্রামে এক কবিরাজের চিকিৎসা নেন। বেশ কয়েকদিন হলো তিনি অসুস্থ বোধ করায় স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই ব্যক্তি জলাতঙ্ক রোগী বলে সোমবার চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন।
সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা তার উপসর্গ দেখে ও ঘটনা শুনে নিশ্চিত হয়েছি, তিনি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কুকুর কামড়ালে ভ্যাকসিন (প্রতিষেধক) ছাড়া আর কোনো ওষুধ নেই। তাই কুকুড়ের কামড় খেয়ে কবিরাজি চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁক না নিয়ে
সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে সাঁথিয়ায় কয়েকটি গ্রামে কুকুরের মড়ক দেখা দিয়েছে। রোববার (২৬ মার্চ) রাতে উপজেলার কুমিরগাড়ী গ্রামে একসঙ্গে তিনটি কুকুর মারা গেছে। আরও কিছু কুকুরকে ঝিমাতে দেখা গেছে বলে গ্রামের কয়েকজন জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর আগে উপজেলার সব কুকুরকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও কেন কুকুর মারা যাচ্ছে তা খোঁজ নেওয়া হবে।
সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার বলেন, জনসাধারণের আতঙ্কের কিছু নেই। যারা কুকুড়ের কামড় খেয়েছিলেন তাদের উপজেলা পরিষদের রোগী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আর কোনো এলাকায় গণহারে কুকুর মারা গেলে কারণ অনুসন্ধান করা হবে।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এসআর/জিকেএস