ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় গরমের সঙ্গে বাড়ছে তরমুজ-ডাবের দাম

জেলা প্রতিনিধি | চুয়াডাঙ্গা | প্রকাশিত: ০৮:৫২ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২৩

চুয়াডাঙ্গায় অন্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তরমুজ ও ডাবের দাম। প্রচণ্ড গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এক সপ্তাহ ধরে জেলায় দেশের মধ্যে রেকর্ড তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সোমবারও (১০ এপ্রিল) ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তীব্র গরমে জনজীবনে অস্থিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থায় চাহিদা বেড়েছে তরমুজ ও ডাবের।

সকাল থেকে বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে তরমুজের দাম বেড়েছে। আগে খুলনার কয়রা থেকে চুয়াডাঙ্গা বাজারে আসা ১০০ তরমুজ বিক্রি হতো ১৫-২০ হাজার টাকায়। এখন তা বেড়ে ২২-২৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা বাজারে বরিশাল অঞ্চলের তরমুজের দাম তুলনামূলক কম। এ তরমুজের দাম ১০-১৪ হাজারের মধ্যে ছিল। এখন তা ১৬-১৯ হাজারে বিক্রি হচ্ছে।

তবে এখন চুয়াডাঙ্গা বাজারে বরিশাল অঞ্চলের তরমুজ সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ খুলনার কয়রার তরমুজ এখানে বেশি চলে। তাই ব্যাপারীরা বরিশাল অঞ্চলের তরমুজ আনছেন না। জেলায় একসময় তরমুজ কেজিতে বিক্রি হলেও এখন পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ছোট আকারের তরমুজ প্রতি পিস ১৭০-২৭০ টাকা এবং বড় তরমুজ ৩০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা রেল বাজারের পাইকারি বিক্রেতা নাজমুল মিয়া বলেন, ‘তরমুজের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। তাই মার্কেটে দাম বেড়েছে। বেশি দামে কয়রা থেকে মাল কিনতে হচ্ছে। এজন্য বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। রোজার শুরুতে এত দাম ছিল না।’

আরেক পাইকারি বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তরমুজের দাম বেড়েছে। আমরা মহাজনের কাছ থেকে বেশি দামে কিনছি। ঈদের আগে দাম কমার সম্ভাবনা তেমন নেই।’

আরও পড়ুন: টানা এক সপ্তাহ চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড তাপমাত্রা, জনজীবন কাহিল

এদিকে ডাবের চাহিদা আকাশচুম্বী। আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছোট-বড় ডাব খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে গড়ে ৪০-৫৫ টাকায় বিক্রি করতেন। এখন সেটা বেড়ে ৫৫-৭৫ টাকায় ঠেকেছে। চুয়াডাঙ্গা বাজারে বড় ডাব ৯০-১০০ টাকা, মাঝারি ৮০-৯৬ টাকা এবং ছোট ডাব ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডাব বিক্রেতা চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট মোড় এলাকার মোস্তফা ও গেদা আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ডাবের পাইকারি দর এখন বেশি। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। মানুষের চাহিদা আগের তুলনায় বেশি। তবে তাপমাত্রা কমলে দামও কমে যাবে।’

শহীদ হাসান চত্বরে বিক্রেতা হারুন আলী বলেন, ‘ভাই, ডাব পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাচ্ছি দাম বেশি হওয়ায় কাস্টমাররা দরদাম করছে। দাম বেশি নেওয়ায় পরিচিতরা রাগ করছে। তাই তরমুজ বিক্রি শুরু করেছি। তাপমাত্রা কমুক। কম দামে ডাব পেলে আবার বিক্রি শুরু করবো।’

ডাব কিনতে আসা আলমগীর কবির শিপলু বলেন, গত সপ্তাহেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৫৫ টাকায়। এটা এখন দেখি ৭৫ টাকা হয়ে গেছে। বড়টা তো ১০০ টাকা। দাম এত বেড়েছে যে কিনতেই ইচ্ছে করছে না। আবার যে গরম ডাব না খাইলেও সমস্যা। সিন্ডিকেটের কারণেই ডাব ও তরমুজের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন এই ক্রেতা।

চুয়াডাঙ্গা সদরের সরিষডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট বলেন, ‘গরম বেড়েছে বলে অনেক ব্যবসায়ী ডাব আর তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। এ গরমে ইফতারিতে ডাব ও তরমুজ বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। এটা বুঝেই ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের সুযোগ নিচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা কাঁচামাল ও আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা দোকান মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক মাফিজুর রহমান মাফি ক্রেতাদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাজারে মালের সংকট আছে। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত মাল পাচ্ছেন না। আমদানি কিছুটা কম থাকায় আমাদের বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। যে কারণে বিক্রিও করতে হচ্ছে সেভাবে।

এসআর/এএসএম