ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

তীব্র যানজটে নাকাল ঈশ্বরদীবাসী, ট্রাফিক নির্বিকার

শেখ মহসীন | ঈশ্বরদী (পাবনা) | প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৩

পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের বাজার, রেলগেট, পোস্ট অফিস মোড়, চাঁদ আলী মোড়, স্টেশন রোড়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ অসহায়। তাদের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসাীকে।

রেলগেট ঈশ্বরদীবাসীর কাছে এক দুর্ভোগ ও দুঃসহ যন্ত্রণার নাম। প্রতিদিন অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ বার এখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। রেলগেটের ব্যারিয়ার পড়লেই দু’পাশে প্রায় এক থেকে দুই কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় রেলগেট হয়ে স্টেশন অভিমুখে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই সময়ে উপজেলা সড়ক, টিপু সুলতান রোড ও বিমানবন্দর সড়কে যানজট দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, ঈশ্বরদী অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ইপিজেডসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এ উপজেলায় আছে। পাশাপাশি এখানকার অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানায় হাজার হাজার মানুষ কর্মরত। এ শহরের প্রতিটি সড়ক সবসময় ব্যস্ত থাকে। ব্যস্ততম সড়কে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।

jagonews24

পৌর শহরের পিয়ারাখালী এলাকার বাসিন্দা খায়রুল আলম কিরণ বলেন, রেলগেটের পশ্চিম পাশে আমাদের বসতবাড়ি। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ-ছয়বার বিভিন্ন কাজে রেলগেট পাড়ি দিয়ে বাজারসহ রেলগেটের পূর্বে যেতে হয়। এরমধ্যে কমপক্ষে পাঁচবার রেলগেট বন্ধ থাকে। রেলগেট বন্ধ হলেই ১৫-৪৫ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাধ্য হয়ে রিকশা ছেড়ে হেঁটে রেলগেট পাড়ি দিতে হয়। মোটরসাইকেলে থাকলে তো রেলগেটে অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় থাকে না। রেলগেটের দীর্ঘ যানজটে জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

রিকশাচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শহর জুড়ে এখন শুধু যানজট। বাজার ও রেলগেটের যানজট তো নিত্যদিন লেগেই আছে। এখন মাঝে মধ্যেই পোস্ট অফিস মোড়ে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। যানজটের কারণে সড়কে আমাদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। ফলে আয়ও কমে যাচ্ছে। যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি যানবাহনের চালকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।

ঈশ্বরদী ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। কোথাও যানজটের সৃষ্টি হলে আমরা দ্রুত তা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

jagonews24

ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ঈদে মানুষের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে পৌর শহরের সড়কে যানজট নিরসনের জন্য বণিক সমিতির উদ্যোগে পৌরসভার মেয়র, ঈশ্বরদী সার্কেলের অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ট্রাফিক সার্জেন্টদের সঙ্গে সম্প্রতি মতবিনিময় হয়েছে। যানজট নিরসনে মেয়র, পুলিশ ও ট্রাফিক কর্মকর্তারা নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব গোস্বামী জাগো নিউজকে বলেন, যানজট নিরসনে ঈশ্বরদী ট্রাফিক বিভাগ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। সড়কে ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন যেভাবে বেড়েছে এতে সড়কে মাঝেমধ্যেই প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। এরপরও জনসচেতনতামূলক নানা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে চালক ও সাধারণ মানুষ সচেতন হয়। যেখানে সেখানে যানবাহন রেখে যানজটের সৃষ্টি না করে।

ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। শহরের যানজট নিরসনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাজার এলাকার যানজট নিরসনের জন্য ২০ রোজার পর বাজারের প্রধান ফটক থেকে ফকিরের বটতলা পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। ফকিরের বটতলা থেকে মানুষ হেঁটে বাজারে যাবে। ঈদের কেনাকাটায় মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এসজে/এমএস