ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মোহনগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কম দেওয়ায় ডিলারকে শোকজ

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোনা | প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২৩

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কম দেওয়ার অভিযোগে রেজাউল ইসলাম সোহেল নামের এক ডিলারকে শোকজ করা হয়েছে। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে তাকে শোকজ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, উপকারভোগীদের ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা। তবে ওই ডিলার দীর্ঘদিন ধরে সঠিক ওজনের চাল দিচ্ছেন না। ডিজিটাল মিটার ব্যবহার না করে বালতি দিয়ে চাল দিচ্ছেন তিনি। এতে ৩০ কেজির জায়গায় চাল হচ্ছে ২৭ কেজি। ফলে প্রতি উপকারভোগী প্রায় ৩ কেজি চাল কম পেয়েছেন।

দুপুরে ওই উপজেলার বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়নের বিরামপুর বাজারে থাকা ডিলার রেজাউল ইসলাম সোহেলের বিতরণ কেন্দ্রে গিয়ে এমন অনিয়ম পান উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান। এ সময় দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান সজিবকেও চাল বিতরণের স্থলে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি: মেহেরপুরে ডাটাবেজ তৈরিতে ধীরগতি 

পরে এ ঘটনায় ডিলার রেজাউল ইসলাম সোহেলকে কারণ দর্শাতে বলেছেন (শোকজ) খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান। তিন কর্মদিবসের মধ্যে ডিলারকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার সাত ইউনিয়নে চার হাজার ৯৫৬টি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড রয়েছে। এরমধ্যে বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়নে ৬৯৫টি কার্ড রয়েছে। এ ইউনিয়নে মো. সুজন মিয়া ও রেজাউল ইসলাম সোহেল এ দুজন ডিলার রয়েছেন। তাদের মধ্যে ডিলার মো. সুজন মিয়া শিবির বাজারে চাল বিতরণ করেন। তার কার্ড সংখ্যা ৩২১টি। আর মো. রেজাউল ইসলাম সোহেল বিরামপুর বাজারে চাল বিতরণ করেন। তার কার্ড সংখ্যা ৩৭৪টি। প্রতি কার্ডধারী ১৫ টাকা কেজি ধরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারেন।

দুপুরে বিরামপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চাল নিতে আসা পানুর গ্রামের উপকারভোগী তরিকুল ইসলাম ডিলারের কাছ থেকে চাল নেওয়ার পর পাশের একটি দোকানে ডিজিটাল মিটারে মাপেন। দেখেন বস্তায় ২৭ কেজি ৪০০ গ্রাম চাল আছে।

https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/netrokona-2-20230412220034.jpg

তরিকুল জানান, প্রতিবার ডিলার বালতি দিয়ে চাল মেপে দেয়। সব সময় ওজনে চাল কম হয়। ডিলারের কাছে মাপার ডিজিটাল যন্ত্র রয়েছে কিন্তু ওই যন্ত্রে কাউকে চাল মেপে দেন না। বালতি দিয়ে সবাইকে চাল মেপে দেন। যন্ত্রটা জাস্ট দেখানোর জন্য রাখা আছে।

আরও পড়ুন: কালোবাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল, ডিলারশিপ বাতিল 

পাবই গ্রামের উপকারভোগী হালেমা ও রোকেয়া আক্তারের চাল ডিজিটাল যন্ত্রে মাপার পর ২৭ কেজি ৪০০ গ্রাম ওজন হয়। তারাও একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া এমন আরও অসংখ্য উপকারভোগীর চাল ডিজিটাল যন্ত্রে মাপার পর চাল ওজনে তিন কেজি করে কম পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান ও গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মোতাকাব্বির খান প্রবাস উপজেলার বিরামপুর বাজারে ডিলারের বিতরণ কেন্দ্রে যান। পরে সেখানেও উপকারভোগীদের চাল ডিজিটাল যন্ত্রে মেপে ওজনে কম দেখতে পান। পরে এ ঘটনায় ডিলার রেজাউল ইসলাম সোহেলকে শোকজ করা হয়।

অভিযুক্ত ডিলার রেজাউল ইসলাম সোহেল বলেন, বেশির ভাগ চাল ডিজিটাল যন্ত্রে মেপে দেওয়া হয়। তবে বালতি দিয়ে মেপে দিলেও চাল কম হয় না। তাড়াতাড়ি দিতে গিয়ে হয়তো এমনটা হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান বলেন, চাল কম দেওয়ার বিষয়টি সরেজমিন গিয়ে সত্যতা পেয়েছি। বালতি দিয়ে চাল মাপা অনিয়ম। উপকারভোগীদের প্রায় ৩ কেজি চাল কম দেওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনায় ডিলারকে শোকজ করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, এ ঘটনায় ডিলারকে শোকজ করা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

এইচ এম কামাল/আরএইচ/জিকেএস