ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সৌদিতে নিহত আবুল ও নুরুলের বাড়িতে শোকের মাতম

প্রকাশিত: ০১:১৬ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৬

সৌদি আরবের রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ বালাদেশির মধ্যে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর আবুল হোসেন (৩৫) ও নুরুল ইসলামের (৪৫) গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

রোববার সকালে উপজেলার রামপুরের মমিনপুরে আবুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের বড় ছেলেকে হারিয়ে সবাই শোকে পাথর। আবুলের বাবা লাল মাহমুদ ও মা ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

আবুলের তিন বছরের শিশু হাসান এখনো বুঝতে পারছে না যে তার বাবা আর ফিরে আসবে না। শুধু চেয়ে চেয়ে সবার কান্না দেখছে। আবার মাঝে মাঝে খেলাধুলায় মনোযোগ দিচ্ছে। কোলের সন্তানকে নিয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা আবুলের স্ত্রী স্বামীকে হারিয়ে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। পরিবারের লোকজনদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা।

আবুলের বাবা লাল মাহমুদ জানান, সংসারে অভাব-অনটনের কারণে ২০০৩ সালে কয়েক শতাংশ জমি বিক্রি করে অনেক কষ্টে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। পাঠানোর পর আবুল কষ্ট করে রোজগারের কিছু টাকা বাড়িতে পাঠাতো। সেই টাকা দিয়েই আমাদের সংসারটা চলতো। ২০০৮ সালে আবুল দেশে আসলে তাকে বিয়ে করানো হয়। ঘরে তার হাসান নামে তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে। এছাড়া আবুলের স্ত্রী বর্তমানে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বাও। আবুল ছিল দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড়। এখন ছেলেকে হারিয়ে আমরা পথে বসে গেছি।

Tangail

একই চিত্র উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বাগদা উত্তর পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের বাড়িতে। তার বাবা আ. খালেক। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে নুরুল ইসলাম সেজো। পরিবারের সবাই পৃথক। তার বাড়িতে গিয়ে প্রথমেই দেখা মিললো তার স্ত্রী আসমা বেগমের। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবেশি ও স্বজনেরা তার মাথায় পানি ঢালছে সেই সঙ্গে সান্ত্বনা দেয়ারও চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে কি শান্ত হবে আসমা।

নরুল ইসলাম এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। মেয়ে আখলিমাকে বিয়ে দিয়েছে সৌদি প্রবাসি একজনের সঙ্গে। ছেলে আসাদুল­া (২২) বর্তমানে স্থানীয় একটি কলেজে অধ্যায়নরত।

বাড়ির উঠানেই বসে চাপা কান্না কাঁদছেন নরুলের ছেলে আসাদুল­া। এসময় তার মুখে একটাই কথা আমার সঙ্গে আর কোনদিন বাবা কথা বলবে না।

স্বজনরা জানান, প্রতিদিন কাজ শেষ করে নুরুল ইসলাম তার ছেলের সঙ্গে রাতে কথা বলতো। খোঁজ খবর নিতো। ছেলে ও পরিবারের সবাইকে খুব আদর করতো। দেশে আসলে সবার খোঁজ-খবর নিতো।

নিহতদের মরদেহ ফেরত আনার বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাদের খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এআরএ/এবিএস