পুকুরের পানি নেওয়ায় নষ্ট করে দেওয়া হলো স্কুলকর্মচারীর চোখ
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন সাগর হোসেন
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরশহরে পুকুর থেকে পানি নেওয়ায় আব্দুল্লাহ ওরফে সাগর হোসেন (২৪) নামে এক স্কুলকর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই কর্মচারীর চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে নিশ্চিন্তপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সাগর হোসেন কালীগঞ্জ ভূষন নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাবর আলীর ছেলে। অভিযুক্ত নেহাল হাসনাইন লিপু একই এলাকার মৃত ওবাইদুল হকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কালীগঞ্জ ভুষন নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ভবনের কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। এ কাজে পানির প্রয়োজন হয়। সাগর সরকারি নলডাঙ্গা ভূষন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে পানি নিয়ে স্কুলের কাজে ব্যবহার করছিলেন। বিষয়টি দেখে পুকুরের ইজারাদার নেহাল সাগরের ওপর চড়াও হন। কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে সাগরকে মারধর করা হয়।
নেহাল সাগরের চোখে কিছু একটা দিয়ে আঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হলে সেখান থেকে ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে নেহাল হাসনাইন লিপুর মোবাইল নম্বরে কল দিলে রিসিভ করেননি। পরে আবার কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
কালীগঞ্জ ভুষন নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিদ্যালয়ে একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছিল। সকালে একজন শিক্ষক আর আব্দুল্লাহকে কাজ তদারকির দায়িত্ব দিয়ে আমি অন্য একটি কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে শুনি নলকূপ স্থাপনের জন্য পানি প্রয়োজন হচ্ছিল। তাই আমার স্কুলের কর্মচারী আব্দুল্লাহ পাশের বিদ্যালয় সরকারি নলডাঙ্গা ভূষন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে পানি নিয়েছিল। এ কারণে তাকে কে বা কারা মারধর করেছে বলে আমি জানতে পেরেছি।
সরকারি নলডাঙ্গা ভূষন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মগবুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পানি নেওয়ার জন্য যে ঘটনাটি ঘটে বলে শুনেছি তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান জাগো নিউজকে বলেন, মারামারির যে ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। এমনকি কেউ কোন অভিযোগও করেনি।
ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র প্যারামেডিক মো. আবু দাউদ জাগো নিউজকে বলেন, সাগর হোসেন আমার এখানে এসেছিল তার চোখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। দেখে মনে হলো তার চোখে আঙুল বা অন্য কোনো কিছু চোখের কর্নিয়ার বরাবর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তার চোখটা আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তার অপর চোখ বাঁচাতে হলে ক্ষতিগ্রস্ত এ চোখটি অপারেশনের মাধ্যমে তুলে ফেলতে হবে। তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বড়িতে নিয়ে গেছে পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে কি-না আমার জানা নেই।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসজে/জেআইএম