ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নূর হোসেন ও তারেকের পক্ষে আবারো সময় প্রার্থনা

প্রকাশিত: ১২:৫৪ পিএম, ০৭ মার্চ ২০১৬

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলার একটিতে বাদী বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

আলোচিত নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও নূর হোসেন ও তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টের পিটিশনের অজুহাতে সময় প্রার্থনা করেন। কিন্তু প্রার্থনা নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

Narayanganj   
সোমবার সকাল হতে বিকেল পর্যন্ত ২য় দফায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ১১ জনের সাক্ষ্য জেরা গ্রহণ করা হয়। আদালত আগামী ১৪ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন। এর আগে ১০ মার্চ মামলার অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির অসমাপ্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।

এদিকে নুর হোসেন ও তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবী সোমবার সকালে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের কথা বলে সাত খুনের মামলা স্থগিতের আবেদন করেন। পরে সাক্ষ্য গ্রহণে ৪ জনের জেরা শেষে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত। কিন্তু বিকেল ৩টার পর সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রমে নুর হোসেন ও তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবী উচ্চ আদালতের কোনো আদেশের কপি দেখাতে না পারলে ফের জেরার জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত তাদের সকল আবেদন নামঞ্জুর করেন।

NaraYANGANJ   
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সোমবার ১৩ জনের জেরা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সকালে নূর হোসেন ও তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে মামলা ও সাক্ষ্য স্থগিতের আবেদনের কথা বলে সাক্ষী শুনানি মুলতবির আবেদন করেন। কিন্তু, ওই সময় তিনি উচ্চ আদালতের আদেশ দেখাতে পারেননি। পরে আদালত দুপুর ৩টায় শুনানির সময় ধার্য্য করেন। বিকেল ৩টায় শুনানির সময়েও কোনো আদেশ দেখাতে না পারায় সাক্ষী শুনানি মুলতবি ও স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়ে দুইজনের পক্ষের আইনজীবীদের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা বলেন। কিন্তু, তাদের আইনজীবীরা সাক্ষ্য গ্রহণে অনিহা প্রকাশ করায় আদালত বিজয় পালের সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করেন। এছাড়াও সোমবার অপর ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে আদালতের একটি সূত্র জানায়, দুপুরে সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির সময় পিপি আদালতকে জানান, যে উচ্চ আদালতে ৭ খুন মামলা বাতিল ও অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের বিষয়ে বিব্রতবোধ করেছেন হাইকোর্ট।

ওই সূত্রটি জানায়, এ রিটের আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। বিকেল পৌনে ৩টায় বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিব্রতবোধ করে রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা আবেদন শুনানির জন্য পৃথক বেঞ্চ গঠন করবেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. এমদাদুল হক আদালতে বলেন, এ মামলার শুনানিতে আমাদের মধ্যে একজন বিব্রতবোধ করছি।

আদালতের সূত্র মতে, এর আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালতে অন্য আরেকটি মামলার বাদী নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহণের দিনও নূর হোসেন, র‌্যাব কর্মকর্তা এমএম রানা এবং তারেক সাঈদের পক্ষে তাদের আইনজীবী বাদীকে জেরার জন্য আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেন। এরপরেই আদালত ৭ মার্চ বিজয় পালের দ্বিতীয় স্বাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য্য করেন। সেদিন পলাতক ১২ জন ও উপস্থিত ১০ জনের জেরা হয়। সোমবার ১৩ জনের জেরা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২ জনের পক্ষে আইনজীবী উচ্চ আদালতের আদেশের কথা জানালে আদালত ৩টা পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি করে। তবে অপর ১১ জনের মধ্যে ৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিকেল ৩টার পর বাকিদের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

সাক্ষ্য প্রদান করে বিজয় কুমার পাল সাংবাদিকদের বলেন, আজকে নিয়ে আমি তিনবার আদালতে এসেছি। মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতা করা হচ্ছে। তবে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নানা অজুহাতে বিভিন্ন আবেদন করে মামলাটি দীর্ঘ করানো হচ্ছে। এতে করে আসামিপক্ষের লোকজন সুযোগ সুবিধা পাবে।

এদিকে সকালে আদালতে জেরার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি খোকন সাহার সঙ্গে বাদী পক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন খানের তুমুল বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।

NaraYANGANJ

এর আগে গত ৩ মার্চ সাত খুনের ঘটনার অপর মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সেদিন তিন আসামির পক্ষে (নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও এম এম রানার) সময় প্রার্থনা করায় ওই ৩ জন ছাড়া উপস্থিত অপর ২০ আসামি ও পলাতক ১২ আসামির পক্ষের আইনজীবীরা বিউটিকে জেরা করেন। তিন আসামির পক্ষের পরে সময় আবেদন করায় আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেন আদালত।

সাত খুনের দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা ও অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি হলেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামির মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও এম এম রানার পক্ষের আইনজীবীরা সময় প্রার্থনা করলে আদালত ৭ মার্চ শুনানির দিন ধার্য্য করে। ওই দিন তথা ২৯ ফেব্রুয়ারি ২৩ জনের মধ্যে ১০ জন ও পলাতক ১২ আসামির সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। ৩ মার্চ বাকি ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল। এদিন সকালেই গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।

শাহাদাত হোসেন/এফএ/এমএএস/এবিএস