ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষকের কারাদণ্ড
পাবনার চাটমোহরে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষককে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাখালি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এবং চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বেশ কিছু ধরে পাঠদানের সময় বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রীদের শরীরে হাত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ক্লাস চলাকালীন ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর শরীরে হাত দেন। বিষয়টি বুধবার সকালে জানাজানি হওয়ার পর ফুঁসে ওঠে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে চড়ইকোল বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্কুল ও আশপাশের এলাকায়।
এ সময় রোষানল থেকে বাঁচতে স্কুল কক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটকে রাখেন অন্যান্য শিক্ষকরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান পুলিশ নিয়ে স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেন। এ সময় তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন তলাপাত্র জানান, আমি কয়েক দিন ছুটিতে ছিলাম। আজ স্কুলে এসে বিষয়টি জানতে পারি। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। আমরা সেটি নিয়ে কিছু করার আগেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর পরই স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে জরুরি বৈঠকে বসেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে আলোচনা শেষে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে আরও জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালেও এমন একটি ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
একে জামান/এসএস/এমএস