ঈদের ছুটিতেও পর্যটক শূন্য বান্দরবান
ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকার কথা থাকলেও এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে স্থানীয় কয়েকজন দর্শনার্থীর দেখা মিললেও অন্য জেলার ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা খুবই কম।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) জেলার নীলাচল, মেঘলা ও শৈলপ্রপাত পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটক কম থাকায় হোটেল পরিচালনার খরচ তুলতে না পেরে হোটেলের কর্মচারী ছাঁটাই করতে হয়েছে। অনেকেই হোটেল বিক্রি করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন।

নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শোভা তঞ্চঙ্গ্যা জানান, আগত পর্যটকদের কাছে বিক্রির আশায় ঋণ নিয়ে দোকানে মালামাল ও মৌসুমি ফল রেখেছেন। কিন্তু পর্যটকের উপস্থিতি কম হওয়ায় তেমন বেচাবিক্রি নেই। এতে ফলগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ আট মাস ধরে খুবই আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
নীলাচলের টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সুমি তঞ্চঙ্গ্যা জানান, গতবছর বিশেষ ছুটির দিনে দৈনিক কয়েক হাজার পর্যটক নীলাচল ভ্রমণে আসতেন। এবার এই ঈদের প্রথমদিনে বিকেল ৩টা পর্যন্ত একশ পর্যটকও প্রবেশ করেননি।

মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রের টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, বর্ষা মৌসুমে পর্যটকের আগমন কিছুটা কম থাকে। সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ৮০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম।
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালির ম্যানেজার মো. সুমন বলেন, ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে হোটেল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পর্যটক না থাকায় এর বাইরে আগতদের সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও ১০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়নি।
হোটেল হিল ভিউয়ের ম্যানেজার তৌহিদ পারভেজ বলেন, তাদের হোটেলে একশর অধিক কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র চারটি কক্ষ বুকিং হয়েছে। তবে আগামী দুইদিন পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

হোটেল নীলাদ্রির মালিক সুজন দাশ জানান, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এপর্যন্ত প্রায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে জেলার কয়েকটি উপজেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হোটেল ব্যবসায় প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত হোটেলটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবিরিজী জানান, জেলার তিনটি উপজেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকলেও বাকি চার উপজেলা সম্পূর্ণ নিরাপদে যে কেউ ভ্রমণ করতে পারেন। হোটেল গুলোতে আগাম বুকিং কম হলেও ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক আসার সম্ভাবনা আছে।
তিনি আরও বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নীলাচল ও মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
নয়ন চক্রবর্তী/এমআরআর/জিকেএস