প্রবাস থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সফল বাবুল
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার (৫৫)। সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন নানা জটিলতার কারণে। সেখানে শ্রমিক হিসেবে ১৯ বছর কাজ শেষে ২০১৭ সালে প্রায় খালি হাতেই দেশে ফিরতে হয় বাবুলকে।
তবে দেশে ফিরে ইউটিউবে ভিডিও দেখে উৎসাহিত হয়ে ড্রাগনের চাষ করে মিলেছে সফলতা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা প্রায় দেড় হাজার চারা নিয়ে ড্রাগনের বাগান করতে তার খরচ হয়েছিল ১৮-২০ লাখ টাকা। এবছর ভালো ফলন হলে খরচের টাকার পরেও লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

বাবুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। তার ক্ষেতের এক একটি ড্রাগন ফল ৭০০-৮০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। বাগান থেকে প্রতি কেজি ড্রাগন ৩০০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করেন।
এছাড়া বাবুল এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তার বাগান থেকে ড্রাগন চারা কিনে নেন। গত বছর ফল ও চারা বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকার বেশি আয় করেছেন। এ বছর তার চেয়ে অনেক বেশি হবে বলে আশা করছেন তিনি। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে খেজুর, চুইঝাল, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন।

আরও পড়ুন: ড্রাগন চাষে সফল ফজলুর রহমান
ড্রাগন চাষি বাবুল হাওলাদার বলেন, গত বছর এবং এ বছর ড্রাগন চাষ করেছি। সঠিকভাবে বিক্রি হলে আশা করছি ক্ষেতের খরচ উঠে যাবে। খুলনা, ঝিনাইদহ ও ঢাকার গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দেড় হাজার চারা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছিলাম। এখন আমার ড্রাগন ক্ষেতে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ আছে। আমি বাণিজ্যিকভাবে বাউ ড্রাগন ফল ১, ২ ও ৩ চাষ করছি। মে থেকে ডিসেম্বর এই সময়টার মধ্যে ড্রাগন ফল খাবার উপযোগী হয়ে থাকে। ফুল ফোটার ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফলটি খাওয়ার উপযোগী হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার দেখাদেখি এলাকার শিক্ষিত যুবকরা ড্রাগনের বাগান করেছে। তাদের বাগানেও লাভ হচ্ছে। তারা চাকরির পেছনে না দৌড়ে অনেকে আমার কাছে আসছে বাগান তৈরির পরামর্শের জন্য।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, পিরোজপুর জেলায় এবছর পাঁচ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৪ মেট্রিক টন। বিদেশি এ ফলটি চাষের ইতিহাস খুব বেশি পুরোনো নয়।
আরএইচ/এএসএম