বেঞ্চ-বার সুসম্পর্কে বড় বাধা আইনজীবীরাই: বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
বেঞ্চ ও বারের মধ্যে সুসম্পর্কে আইনজীবীরাই বড় বাধা বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেন, ‘বেঞ্চ ও বারের মধ্যে সম্পর্কের প্রধান অন্তরায় হচ্ছেন আইনজীবীরাই।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘একটি মামলার দুই পক্ষ থাকে। এতে একপক্ষ হারবে, আরেকপক্ষ জিতবে। এটি খুব স্বাভাবিক। যিনি হারলেন তিনি যদি ধরেন যে, আমার হয়তো মামলায় পয়েন্ট ছিল না তাই হেরে গেছি। সেটা অত্যন্ত ভাল। তিনি যদি এ কথা না বলে; বলে বেড়ান জজ সাহেব তো ঘুস খেয়েছেন। এটা সর্বনাশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা যদি বলেন কোনো আইনজীবী, তাহলে তার মক্কেল সেটা বিশ্বাস করবেন। আমি এটা অনেক দেখেছি, মামলায় হেরে গেলে অনেক আইনজীবীরাই বলে বেড়ান, জজ সাহেব ঘুস খেয়েছেন। আইনজীবী যদি এটি না বলেন, তাহলে জজ সাহেবের বিরুদ্ধে এ অপবাদ আসতো না।’
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আপিল বিভাগের এ বিচারপতি বলেন, ‘পরিসংখ্যান আছে সারাদেশে ৯৭-৯৮ শতাংশ জজ সৎ। টিআইবি আমাদের তকমা দেয়, বিচারবিভাগ দুর্নীতিগ্রস্ত। কেন দেয়? বিচারক থেকে আইনজীবী, পুলিশ পর্যন্ত যারা আছেন, সবাই কিন্তু বিচারকাজের অংশ। তাদের মধ্যে কারও যদি উল্টাপাল্টা হয়, এ সবগুলো দায়ভার কিন্তু পড়ে জজ সাহেবের ওপরে। বিচার বিভাগ দুর্নীতিগ্রস্ত এ কারণেই বলা হয়।’
ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘বর্তমান পার্লামেন্টে সম্ভবত আইনজীবীর সংখ্যা ১৭ কিংবা ১৮ জন হবেন। একটা সময় এ আইনজীবীর সংখ্যা ছিল অনেক। আইনজীবী বা আইনের ব্যাকগ্রাউন্ড ছিলেন এরকম ছিলেন ৭০-৮০ জন। কিন্তু এখন পার্লামেন্টের অবস্থা কী? রাজনীতিতে সচেতন হতে হবে, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। আইনজীবীদের সমাজ পরিবর্তনে অংশ নিতে হবে। সেজন্য প্রত্যেক আইনজীবীকে তৈরি হতে হবে।’
মৌলভীবাজার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জাকারিয়া, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রমা কান্ত, সাধারণ সম্পাদক বদরুল হোসেন ইকবাল প্রমুখ।
আব্দুল আজিজ/এএএইচ