ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ভাঙচুর

উপজেলা প্রতিনিধি | ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) | প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৩

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় সেলিনা বেগম (৪৭) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা।

শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর নিউ টাউন এলাকার গ্রামীণ হাসপাতালে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

মৃত সেলিনা বেগম পৌর শহরের জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া আওয়ালকান্দা এলাকার আক্তার মিয়ার স্ত্রী।

স্বজনরা জানান, ৬ জুলাই দুপুরে পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায় গ্রামীণ হাসপাতালে জরায়ু অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয় সেলিনা বেগমকে। দিনব্যাপী বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ জুলাই বিকেলে জরায়ু অপারেশন করেন ডা. ফাহিমা শারমিন হানী। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মোটামুটি ভাল থাকার পর থেকে রাত ১১টায় সেলিনা বেগমের অবস্থা অবনতি হতে থাকে। রাত ৪টায় সময় রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক সেলিনা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।

আরও পড়ুন: ভৈরবে দুপক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত দোকান ভাঙচুর

এ বিষয়ে রোগীর মেয়ে জামাতা শাহ আলম জানান, আমার শ্বাশুড়িকে ৬ জুলাই পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৭ জুলাই ১১টায় অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়। এসময় আমার স্ত্রী ও শ্যালক উনার সঙ্গে ছিলেন। বিকেল ৪টায় অপারেশন করার পর রাত ২টায় আমার শ্বাশুড়ির অবস্থা খারাপ হয়। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা কোনো পাত্তাই দেয়নি। রাত ৪টায় অজ্ঞান অবস্থায় আমার শ্বাশুড়িকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলে। আমরাও বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমার শ্বাশুড়ির কোনো সাড়া শব্দ ছিল না। পথে একটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে তারা বলে আমার শ্বাশুড়ি মারা গেছে। আমরা তা জেনেও ভোরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার শ্বাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সকালের দিকে আমরা আবারও হাসপাতালে ফিরে আসলে হাসপাতালের স্টাফরা গেইট খুলতে চায়নি। পরে আমাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে যায়।

রোগীর স্বামী আক্তার মিয়া জানান, তারা আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। সামান্য জরায়ু অপারেশনে একজন নারী কিভাবে মরতে পারে। এর আগেও তারা আরও দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে অপচিকিৎসার মাধ্যমে। আমরা আগে জানলে এ হাসপাতালে আসতাম না।

গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক বদিউজ্জামান বদি জানান, ডা. ফাহিমা শারমিন হানী ও ডা. দীপঙ্কর রায়ের তত্ত্বাবধানে সেলিনা বেগমের চিকিৎসা হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে অপারেশন হয়। সেলিনা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পথে তিনি মারা যায়। সকালের দিকে পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়ার নেতৃত্বে হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে। থানা পুলিশকে খরব দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে ভৈরব পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়া বলেন, এলাকাবাসী খবর দিলে আমি এসে দেখি উত্তেজিত জনতা হাসপাতাল ভাঙচুর করছে। আমি তাদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করি। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন: ‘সিন্ডিকেটে’ জিম্মি, পানির দরে চামড়া ছাড়ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

একাধিক অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। এমনকি ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, গ্রামীণ হাসপাতালের দুর্ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি। অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ভৈরব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরর্বতী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজীবুল হাসান/জেএস/এমএস