স্বপ্নের ক্রস ড্যাম অনুমোদন, পুনরুদ্ধার হবে ১০ হাজার হেক্টর ভূমি
নোয়াখালীতে ক্রস ড্যাম প্রকল্প স্থাপন ও সমুদ্র থেকে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধারসহ নানা উন্নয়ন মাথায় রেখে ৫৮৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেন।
প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ায় ঢাকঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে উপকূলীয় এলাকার নদীভাঙা অসহায় লোকজন। আর এ আনন্দের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাক।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, উপকূলবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। নদী ভাঙনে চরএলাহীসহ আশপাশের এলাকার প্রায় অংশ বিলীন হয়ে গেছে। অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকায় ১০ হাজারের হেক্টরের বেশি জমি জেগে উঠবে। এ খুশিতে সবাই আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কারাগারে
আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, প্রকল্পটি অনুমোদনে একমাত্র অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের। প্রকল্প অনুমোদনের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করে মসজিদ-মন্দিরে দোয়া করা হয়। রাতে বের করা হয় আনন্দ মিছিল। এতে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন। পরে একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে উৎসব করেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিসেম্বর ২০২২ থেকে জুন ২০২৬ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলায় এটা বাস্তবায়ন করা হবে। ৭ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার ক্রস ড্যাম ও টাই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে উড়িরচরের সঙ্গে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের স্থায়ী যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নদী তীরবর্তী প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙন হতে রক্ষা এবং ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা হবে। পাঁচ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার টাই বাঁধ নির্মাণ, ২৯ দশমিক ২৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও দুই কিলোমিটার প্রতিরক্ষামূলক কাজ করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উড়িরচরের সঙ্গে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ স্থাপন, কৃষিজমি ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, স্থানীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব হবে। ফলে গ্রামীণ আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধিত হবে।
আরও পড়ুন: ছোট মেয়েকে ডাক্তার দেখিয়ে ফিরে বড় মেয়ের লাশ পেলেন বাবা-মা
অন্যদিকে ১০ হাজার হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধার হলে আবাদযোগ্য ছয় হাজার হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত দুই হাজার ৭৩৬ মেট্রিক টন শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া অবহেলিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উড়িরচর-চরবালুয়ার উৎপাদিত শস্য সরাসরি মূল ভূখণ্ডে সরবরাহ করা যাবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/জেএস/এএসএম