প্রধান শিক্ষক-সভাপতি দ্বন্দ্ব
ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার জুগিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরাদ্দ অর্থ ব্যয়ের হিসাব নিয়ে দ্বন্দ্বে ক্লাস বন্ধ রেখে শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে বিদ্যালয় সংলগ্ন আটোয়ারী-পঞ্চগড় সড়কে এই কর্মসূচি পালন করেন অভিভাবকসহ ম্যানেজিং কমিটির লোকজন। তবে এতে শিশু শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির মধ্যে এই দ্বন্দ্বের জেরে সোমবারও বন্ধ ছিল বিদ্যালয়ের পাঠদান।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে নিজের মতো বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। কাউকে আয়-ব্যয়ের হিসাব দেন না। প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়ে ঠিকমতো পড়াশোনাও হয় না। এতে প্রতিবছর কমছে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষক সামছুন নেহারের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করা হয়। তাদের দুইজনকে অপসারণ করে বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষক পদায়নের দাবি জানান অভিভাবকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক পাপলি রানী বলেন, স্কুলে ঠিকমতো লেখাপড়া হয় না। নারী শিক্ষকরা তাদের নিজেদের শিশুদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে আসলো কি না, যদি না আসে তবে কেন আসেনি, এ নিয়ে তাদের কোনো তদারকি দেখা যায় না।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বলেন, স্কুলের জন্য বরাদ্দ অর্থ যথাযথভাবে খরচ করা হয়েছে। হিসাবও একাধিকবার দিয়েছি। কিন্তু সভাপতি সাহেব আমার কাছে চার হাজার টাকা চেয়েছেন। এই টাকা দিতে পারিনি বলে তিনি এসব অভিযোগ করছেন। আর বিদ্যালয় পরিচালনায় আমাদের কোনো অবহেলা নেই। শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পাঠদানেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনিল চন্দ্র পাল বলেন, প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে আছেন। এটা যে একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তিনি তা মনে করেন না। নিজের মতো চালাতে চান। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছ হিসাব দেন না, অভিভাবকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন।
চার হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি টাকা চাইনি। তবে একাউন্টে চার হাজার টাকা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত। তা না করে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। শিশুদের দিয়ে আমাদের র্যালি করানো নিষেধ রয়েছে। সেখানে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করাটা মারাত্মক অন্যায়। বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।
সফিকুল আলম/এমআরআর/এএসএম