ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জমি নিয়ে জেলা পরিষদ-পৌরসভা বিরোধ, তালা ভেঙে গ্যারেজে ঢুকলেন মেয়র

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ১১ আগস্ট ২০২৩

মানিকগঞ্জ শহরে জমির মালিকানা নিয়ে পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার নির্মাণ করা মার্কেট ও গ্যারেজে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের পর গ্যারেজের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন মেয়র রমজান আলী ও তার লোকজন।

তবে গ্যারেজে তালা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, তালা নয়, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করে একটি ব্যানার টাঙানো হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পৌরসভা। সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র মো. রমজান আলী অভিযোগ করে বলেন, জেলা পরিষদ পৌরসভার সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) শহরের বেউথা এলাকায় পৌরসভার গ্যারেজে তালা ঝুলিয়ে দেয় জেলা পরিষদ। ওই গ্যারেজের ভেতরে পৌর এলাকার বর্জ্য অপসারণের কাজে ব্যবহৃত তিনটি গাড়ি আটকা পড়েছে। এতে শহরের বাসাবাড়ি, বাজার ও রাস্তাঘাটের ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য অপসারণকাজ ব্যাহত হচ্ছে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীনকে বিষয়টি অবগত করলেও তালা খুলে দেওয়া হয়নি।

Manik-1.jpg

সংবাদ সম্মেলনেই তিনি ঘোষণা দেন গ্যারেজের তালা ভেঙে বর্জ্য অপসারণের গাড়িগুলো বের করা হবে। মেয়র রমজান আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা পরিষদ ১১৫৩ ও ১১৫৪ দাগে বেউথা এলাকায় একটি মার্কেট ও এলজিইডির পাশে তিনতলা ভবন নির্মাণ করেছে, যা পৌরসভার থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়নি। পৌরসভার বিধান অনুযায়ী ওই স্থাপনা অবৈধ, তাই ওই স্থাপনা দুটি যে কোনো সময় ভেঙে ফেলা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুর রহমান বলেন, ১৯৫৯ সালে ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান এস কে মোল্লা সই করা এক পত্রে জেলা শহরের বেউথা সড়কের পাশে পশ্চিম বান্দুটিয়া মৌজার ৬ দশমিক ৪৭ শতক জায়গা পৌরসভাকে হস্তান্তর করা হয়। তবে ভুলে ঢাকা ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের নামে আরএস রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। পরবর্তীতে এই রেকর্ড সংশোধনী মামলা করে পৌরকর্তৃপক্ষ, যা বর্তমানে জেলা জজ-১ আদালতে বিচারাধীন আছে। এর আগে এসব জমিতে বিশুদ্ধ পানি শোধনাগার, পানির ট্যাংক, পাবলিক টয়লেট, পানি সরবরাহ শাখা অফিস এবং গ্যারেজ ও মার্কেট নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে দুপুর ১টার দিকে মেয়র রমজান আলী লোকজন নিয়ে বেউথা গ্যারেজের সামনে যান। এরপর তার নির্দেশে পৌরসভার এক কর্মচারী হাতুড়ি দিয়ে গেটের তালা ভাঙেন। অপসারণ করা হয় আদালতের স্থিতাবস্থার নোটিশ লেখা ব্যানারও। পরে বর্জ্য অপসারণে ব্যবহৃত দুটি পিকআপ ভ্যান বের করা হয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ওই জায়গা মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের। জেলা পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে ওই দাগের জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের নামে লিজ দিয়ে আসছে। এছাড়া জেলা পরিষদের অর্থায়নে মার্কেট ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে।

Manik-1.jpg

তিনি বলেন, পৌরসভা ওই দাগের জায়গায় যেসব স্থাপনা তৈরি করেছে তা গায়ের জোরে করেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালে জুলাই মাসে জোর করে জেলা পরিষদের ১১৫৪ দাগে পৌরসভা মার্কেট ও গ্যারেজ নির্মাণ শুরু করে, যাতে বাধা দেওয়া হলেও তারা সেটি নির্মাণ করে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আব্দুর রহমান চলতি বছরের ১৪ মার্চ তাদের সব অবৈধ স্থাপনা নিজ দায়িত্বে অপসারণের জন্য পৌরসভাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। মন্ত্রণালয়ের সেই নির্দেশ পৌর মেয়র রমজান আলী বাস্তবায়ন করেননি। সর্বশেষ গত ৩০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পরিষদে থেকে কেবল ওই জায়গায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নোটিশ (ব্যানার) টানিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো তালা দেওয়া হয়নি। পৌর মেয়র রমজান আলী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সেই নোটিশ সরিয়ে ফেলেছেন যা সবাই দেখেছেন।

বি.এম খোরশেদ/এমআরআর/এমএস