সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্প
চেয়ারম্যানের পকেটে ২০ শ্রমিকের মজুরি!
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অতিদরিদ্রের জন্য সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্পের ২০ জন শ্রমিকের ২৯ দিনের মজুরির দুই লাখ ৩২ হাজার টাকা চেয়ারম্যান হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ওই শ্রমিকরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তাদের ২৯ দিনের কাজের মজুরির টাকা প্রত্যেকের বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয়েছে। কারও বাকি নেই। তবে অফিসের তালিকায় থাকা বিকাশ নম্বর তাদের নয় বলে দাবি শ্রমিকদের।
ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের উত্তরবানিয়াগাঁতী গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুল গফুর খান অভিযোগ করে বলেন, তাদের ২০ জন শ্রমিকের মজুরির টাকা বিকাশ নম্বর পরিবর্তন করে তুলে নিয়েছেন জহুরুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কর্মসৃজন প্রকল্পের অধীনে ভাঙ্গাবাড়ি কবরস্থানে মাটি ভরাট ও উত্তর চন্দনগাঁতী চান মাতব্বরের বাড়ি থেকে মাসুদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য তারা ৬০ শ্রমিক কাজ করেছেন। এ কাজের প্রথম কিস্তির টাকা তাদের প্রত্যেকের বিকাশ নম্বরে দৈনিক ৪০০ টাকা হারে ৪০ দিনে ১৬ হাজার টাকা আসে। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তিতে ২০ জনের ২৯ দিনের দুই লাখ ৩২ টাকা বিকাশে আসেনি। টাকা না আসায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে খোঁজ নিয়ে শ্রমিকরা জানতে পারেন, তাদের প্রত্যেকের নম্বরে টাকা পাঠানো হয়েছে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, বিকাশ তালিকায় যেসব ফোন নম্বর দেওয়া আছে তা তাদের নয়। ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নম্বর পরিবর্তন করে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
একই গ্রামের শ্রমিক আমিরুল ইসলাম মেয়ে পারভীন বেগম বলেন, ‘অফিসের খাতা থেকে আমাদের বিকাশ নম্বর চেয়ারম্যান সরিয়ে আরেক নম্বর বসিয়ে টাকা তুলে নিয়েছেন। আমরা এর বিচার চাই।’
ইউপি মেম্বার আব্দুর রাজ্জাক খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজ করার পর মজুরি না পাওয়ায় আমি প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে গিয়েছিলাম। সবাই প্রথম কিস্তির টাকা বুঝে পেলেও দ্বিতীয় কিস্তিতে ২০ জন শ্রমিক ২৯ দিনের টাকা এখনো পাননি। কিন্তু অফিসের তালিকা অনুযায়ী কেউ বাদ নেই। তবে ২০ জন শ্রমিকের যে বিকাশ নম্বর দ্বিতীয় কিস্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রথম কিস্তির নম্বরের সঙ্গে মিল নেই। এগুলা নাকি চেয়ারম্যান পরিবর্তন করেছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, ‘শ্রমিকের দেওয়া বিকাশ নম্বর কিভাবে পরিবর্তন হলো? এটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মাদ মজনু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘শ্রমিকেরা টাকার জন্য অফিসে এসেছিলেন। আমি তাদের টাকা দেওয়ার তালিকা দেখিয়েছি। তবে তারা অভিযোগ করেছেন, তালিকায় থাকা বিকাশ নম্বর তাদের না।’
এম এ মালেক/এসআর/জিকেএস