স্বাক্ষর নিয়েও চাল দেননি ডিলার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল স্বাক্ষর নিয়েও না দেওয়া, এমনকি চাল নিতে গেলে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে।

সদর উপজেলার আলাতুলী ইউনিয়নের ডিলার মো. আব্দুল লতিবের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) এর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দিয়েছেন কার্ডধারী সুবিধাবঞ্চিতরা।

অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কাজ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জুলাই ও আগস্ট মাসের চাল উত্তোলন করেন ডিলার আব্দুল লতিব। এরপর চাল বিতরণ করা হলেও অনেক সুবিধাভোগী এক মাসের চাল পাননি। এরমধ্যে অনেকেই আবার কোনো চালই পাননি। অথচ তাদের স্বাক্ষর ও টিপসই নেওয়া হয়েছে। এমনকি কার্ডে চাল দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে। তবে কার্ডধারী ব্যক্তিরা চাল পাননি।

সুবিধাভোগী এমদাদুল হকের স্ত্রী সমিজা বেগম জানান, দুই মাসের চাল আনতে গেলে দেওয়া হয়েছে এক মাসের। অথচ টিপসই নেওয়া হয়েছে দুই মাসের। পরে এনিয়ে কথা বলতে গেলে ডিলার জানায়, চাল দুই মাসেরই দেওয়া হয়েছে। গত প্রায় ৭ বছর ধরে আমরা চাল পাই। কোনোদিন এমন প্রতারণার শিকার হইনি। তাই বাধ্য হয়েই অভিযোগ দিয়েছি।

আলাতুলী ইউনিয়নের হুমায়ন কবীরের স্ত্রী নূর নাহার বেগম জানান, প্রত্যেক মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে এক বস্তায় ৩০ কেজি করে চাল পাই। চলতি মাসে দুই মাসের চাল দেওয়ার কথা। এমনকি অনেকে পেয়েছেনও। কিন্তু আমাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এক মাসেরও চাল দেওয়া হয়নি।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিলার আব্দুল লতিব। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সত্য নয় ও ভিত্তিহীন। ১৬ জনকে চাল দেওয়া বাকি ছিল। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২২ তারিখে কয়েকজনকে চাল দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবারও ২-১ জন কার্ডধারী চাল নিয়ে গেছে এবং বাকিদের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

আলাতুলি ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসা. মটরি বেগম জানান, নদীভাঙন কবলিত এলাকার কার্ডধারী হতদরিদ্ররা অনেকেই আশপাশের ওয়ার্ড এমনকি পাশের উপজেলায় বসবাস করছে। তাদেরকে ডিলার সঠিকভাবে চাল বিতরণ না করায় সুবিধাভোগিরা অভিযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০ আগস্ট) সুবিধাভোগী ও অভিযোগকারীদের শুনানি করে বক্তব্য নেওয়া নেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মো. সোহান মাহমুদ/এফএ/জেআইএম