লালমনিরহাটে বর্তমান-সাবেক চেয়ারম্যান সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ৬
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী বাজারে এ সংঘর্ষ ঘটেছে।
আহতরা হলেন- ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ছোট ভাই এটিএম শহিদুল ইসলাম (৩৫), সাদিকুল ইসলাম (২৮), জেঠাতো ভাই আজিজুল ইসলাম (৫৫) ও ইদ্রিস আলী (৬৩) এবং ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন (৫৫) ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৫)। এদের মধ্যে সাদিকুল ইসলাম, ইদ্রিস আলী, মহির উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শহিদুল ইসলাম, আজিজুল হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২ অক্টোবর উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জাওরানী গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে বকছার আলী ও আ. জব্বার পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হয়ে বকছার আলী (৫০) ৬ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজে মারা যান। এ ঘটনায় নিহত বকছারের ছেলে জহুরুল বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগে রমিজ উদ্দিন নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে স্থানীয়রা দাবী তোলেন- রমিজ উদ্দিনসহ এ অভিযোগে অনেকের নাম আছে যারা ঘটনার সঙ্গ জড়িত নন। তাই নিরপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার বিকেলে দক্ষিণ জাওরানী গ্রামে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
সেই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্ডল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নিহত বকছারের ছেলে জহুরুল যে অভিযোগ করেছে তাতে অনেক নির্দোষ মানুষের নাম আছে। আর জহুরুলকে চাপে ফেলে নির্দোষ ব্যক্তিদের নাম জড়িয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন।
ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে জাওরানী বাজারের বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্ডলের ব্যক্তিগত অফিস ও তার ছোটভাই সাদিকুলের ফার্মেসিতে হামলা চালিয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন ও তার লোকজন। এ সময় চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আমার ইউনিয়নের দক্ষিণ জাওরানীতে জমি নিয়ে একটি মারামারি হয়। এতে বকছার নামে একজন মারা যান। ওই ঘটনায় বাদীপক্ষ যে অভিযোগ দিয়েছে তাতে কিছু নির্দোষ মানুষকে ফাঁসানো হয়। এ নিয়ে স্থানীয়রা একটি মানববন্ধন করেন। সেই মানববন্ধনে আমি আমার বক্তব্যে বলি ওই অভিযোগটি সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বাদী পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই গিয়ে দিয়ে আসেন। এ কথা বলায় সাবেক চেয়ারম্যান পক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, আমরা কোনো হামলা করিনি। উল্টো তারাই হামলা করেছে। আমি ও আমার ছেলে গুরুতর আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. খিতিশ খালকো জাগো নিউজকে বলেন, উভয়পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা চিকিৎসাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিউল হাসান/এসজে/এমএস