ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বিসিএস দেওয়া হলো না শামিমার

জেলা প্রতিনিধি | চুয়াডাঙ্গা | প্রকাশিত: ০৩:৪১ এএম, ২০ অক্টোবর ২০২৩

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে শামিমা খাতুন নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে ঘোলদাড়ি গ্রামের কুটিপাইকপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন রাতেই দাফন সম্পন্ন হয় শামিমার।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে স্বামী শাহাবুল নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে শামিমাকে হত্যা করেন। বৃহস্পতিবার এ মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। এর আগে সবাই এটাকে আত্মহত্যা বলে ধরে নিয়েছিলেন।

নিহত শামিমা খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামের মোতাহার হোসেন পান্নুর মেয়ে এবং একই উপজেলার ঘোলদাড়ি গ্রামের কুটিপাইকপাড়ার ভূসিমাল ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলামের স্ত্রী।

জানা যায়, চলতি বছরের জুন মাসে শামিমা খাতুনের (২৭) সঙ্গে শাহাবুল ইসলামের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

jagonews24

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শামিমা খাতুন মেধাবী ছিলেন। নিজ গ্রামের বিদ্যালয় থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক গণ্ডি পেরিয়ে আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে অনার্স শেষ করেন। ঝিনাইদহের সরকারি কেসি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শামিমা। তার আগেই লাশ হয়ে গেলেন।

শামিমার চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ আল তারেক বলেন, বিয়ের কয়েকদিন পরই যৌতুকের টাকার দাবি করেন শাহাবুল। ফলে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে শামিমার বাবা তার জামাইকে দুই লাখ টাকা দেন। পরবর্তীতে আবারও ব্যবসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন শাহাবুল। বাবার পক্ষে এ টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকতো। একপর্যায়ে বাড়িতে এসে নির্যাতনের কথা জানান শামিমা। স্বামীর অনুনয়-বিনয়ের কারণে বাবার বাড়ি থেকে ১৪ অক্টোবর আবার শ্বশুরবাড়ি যান শামিমা। সাথে বিসিএসের বইপত্রসহ সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে যান। শামিমার স্বপ্ন ছিল সরকারি কর্মকর্তা হবেন।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সকালে খবর পেয়ে আমিসহ দুজন শামিমার শ্বশুরবাড়ি যাই। বাড়ির আঙিনায় তার মরদেহ রাখা ছিল। আমাদের জানানো হয়, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন শামিমা। তবে আমরা দেখেছি শরীরে আঘাতের চিহৃ। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা পুলিশকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।

এ খবর শোনার পর থেকেই শামিমার বাবা-মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মেয়ে হারানোর শোকে তারা ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন না। সঠিক তদন্ত করে মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে শামিমার স্বামী শাহাবুল ইসলামের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে এটা হত্যা না কি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

হুসাইন মালিক/জেডএইচ/