ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী সভা

সরকারি গাড়িতে এলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, দুই এমপি চাইলেন ভোট

জেলা প্রতিনিধি | ব্রাহ্মণবাড়িয়া | প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ২০ অক্টোবর ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০ অক্টোবর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে প্রার্থীদের প্রচারণা বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সভা-সমাবেশ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। এবার তার জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোট চাইলেন দুজন সংসদ সদস্য। এছাড়া নির্বাচনী সভায় সরকারি গাড়ি দিয়ে এলেন এক উপজেলা চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কর্মীসভার ব্যানারে নির্বাচনী সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলি আজাদ) নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান। উপজেলা সদরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর রাব্বির সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজি হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

সরেজমিনে ওই সভাস্থলে দেখা যায়, দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মিছিল করে সভায় অংশ নিচ্ছেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি ও ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা উপজেলা পরিষদের সরকারি গাড়ি নিয়ে মিলনায়তনের সামনের রাস্তায় নেমে ভেতরে প্রবেশ করেন। আগে পুলিশ প্রটোকলে নিজের গাড়ি নিয়ে সভায় আসেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ। এর কিছু সময় পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে সভায় আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এরপরই সভা শুরু হয়। সভাস্থলে দুই সংসদ সদস্যের পেছনে পুলিশ দাঁড়ানো ছিল।

bra-(2).jpg

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসার পর এ পর্যন্ত এই আসনটি আওয়ামী লীগ জয়লাভ করতে পারেনি। আমরা লড়াই করতে জানি, তাই বারবার হেরে আবার জয়ের জন্য লড়াই করবো। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে নৌকা প্রতীকের জয়ের জন্য কাজ করতে হবে। এ জয় যেন হয় বিপুল ভোটের বিজয়। এরজন্য ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত হতে কাজ করতে হবে।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজাহান আলম সাজুকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই উনাকে ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করতে হবে। সবাইকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণবিধির ২ এর ১১ উপধারায় বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন- প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোশেনের মেয়র।

এছাড়া আচরণবিধির ১৪ ধারা ৬ উপধারায় বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের শূন্য আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন-পূর্ব সময়ের মধ্যে কোনো সফর বা নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনী এলাকায় ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট দিতে ওই এলাকায় যেতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি এমপি ছাড়াও দলের জেলার সভাপতি। ভোট চাইতেই পারি। এতে আচরণবিধি ভঙ্গ হবে বলে মনে করি না।

সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী সভায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি তা অস্বীকার করেন। বলেন, আমি অন্য জায়গায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার অধিকার রাখি। তবে ভিডিও থাকার কথা জানালে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপ-নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সরওয়ার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঢাকায় নির্বাচনী একটি প্রশিক্ষণে এসেছি। প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারণা চালানোর সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে আচরণবিধি ভঙ্গ হবে। আমি শুক্রবার এসে বিষয়টির খোঁজ নেবো।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসজে/এমএস