ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘ভুয়া স্ট্যাম্পে’ টাকা দাবি, না পেয়ে বৃদ্ধাকে নির্যাতনের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি | নোয়াখালী | প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৩

নোয়াখালীর সূবর্ণচরে ‘ভুয়া স্ট্যাম্পের’ দাবি করা টাকা না পেয়ে এক বৃদ্ধাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কামরুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।

শনিবার (২১) অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন ছায়েরা খাতুন নামে ভুক্তভোগী ওই নারী।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, আমার ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে কামরুল ইসলামের মাধ্যমে মিরাজ ব্যাপারীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিই। তিন বছরে সুদসহ এক লাখ ৭২ হাজার টাকা পরিশোধ করি। এর মধ্যে আমাদের বসতভিটা নামমাত্র মূল্যে কিনতে চায় কামরুল। কিন্তু বিক্রি না করায় ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আমি ও আমার স্বামীকে আটকে ছয় লাখ টাকা দাবি করে সে। এখন আমার স্বামীর মৃত্যুর পর কামরুল ভুয়া স্ট্যাম্প তৈরি করে আমার থেকে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা পাবে বলে দাবি করে আসছে।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, একপর্যায়ে গত ২ সেপ্টেম্বর কামরুল ও তার ছেলে রাশেদ আমাকে ধরে নিয়ে তার বাড়িতে সাড়ে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখে এবং সঙ্গে টাকা আছে কি না দেখার জন্য চৌকিদার দিয়ে আমার শাড়ি খুলে নির্যাতন করে। পরে কিছু না পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার ভয়ে আমি বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছি। এখন চরজব্বর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আনছার উল্যাহ রাসেলকে দিয়ে টাকা আদায়ে বারবার আমাকে হুমকি দিচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ছায়েরা খাতুন বলেন, এসআই রাসেল গত ২ অক্টোবর বিকেলে আমাকে থানায় ডেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬০ হাজার টাকাসহ মোট তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। তখন স্ট্যাম্পের সই আমার নয় বলা হলে স্বাক্ষর মেলানের কথা বলে সাদা কাগজে আমার আরও পাঁচটা সই নেন এসআই। বিষয়টি আমি গত ৯ অক্টোবর নোয়াখালী পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এরপর থেকে কামরুলসহ ওই এসআই আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি।

‘ভুয়া স্ট্যাম্পে’ টাকা দাবি, না পেয়ে বৃদ্ধাকে নির্যাতনের অভিযোগ

এদিকে, সূবর্ণচরের চরমজিদ গ্রামের অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ছায়েরা খাতুনের ছেলেকে বিদেশে পাঠানো বাবদ টাকা পাই। কিন্তু দীর্ঘদিন ঘুরেও টাকা না পেয়ে আমি ইউনিয়ন পরিষদসহ থানায় অভিযোগ করি। স্ট্যাম্পের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। আমার কাছে সব কাগজপত্র আছে।

চরজব্বর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আনছার উল্যাহ রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে আমি আমার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে আসি। পরে গত ২ অক্টোবর থানায় এলে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার অনুরোধ করি। তবে ওই নারীর সই নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, বিদেশে থাকা কেউ একজন তার শ্যালিকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। তবে সংবাদ সম্মেলন করা ওই নারীর সঙ্গে কিছু হয়েছে কি না আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম চরজব্বর থানার ওসির বরাত দিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে ছায়েরা খাতুনের বিরুদ্ধে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই আনছার উল্যাহ তদন্তে গিয়ে বিবাদীকে পাননি। পরে বিবাদী ছায়েরা খাতুন থানায় গিয়ে জানান, তিনি বাদী কামরুল ইসলামের নামে আদালতে মামলা করেছেন। বাদীকে আদালতে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছায়েরা খাতুনের নাতনি মেঘনা আক্তার মেরিনা ও খালাতো ভাই রোকন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হোসেন মজনু/এমআরআর/জেআইএম