ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সিরাজগঞ্জ

কমিটিবিহীন ছাত্রলীগে যেন সবাই নেতা

এম এ মালেক | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ১০:১৩ এএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪

সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই সাড়ে তিন মাস ধরে। এতে ভেঙে পড়েছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা। ফলে নেতৃত্বহীন ছাত্রলীগে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। যে যার মতো নিজেকে আগামী দিনের নেতা পরিচয় দিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। মাঝিবিহীন নৌকার মতো চলতে থাকা ছাত্রলীগের এই শাখায় বর্তমানে অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যেন সবাই নেতা।

প্রায় ডজন খানেক নেতা নতুন কমিটিতে পদ পেতে তোড়জোড়ও শুরু করে দিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ এ শূন্যপদ ভরাট হবে তা কেউ বলতে পারছেন না।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ মে সর্বশেষ সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আহসান হাবিব খোকা সভাপতি ও আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ২১১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটিকে এক বছর দায়িত্ব পালনের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ কমিটি গঠনের তিন বছর ১০ মাস পর গত বছরের ১৪ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন কমিটি বিপুপ্ত ঘোষণা করে। যদিও বিলুপ্তির আগেই এ কমিটির অনেকেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। আবার কেউ কেউ চাকরি কিংবা ব্যবসা শুরু করেন। ফলে জেলা ছাত্রলীগের মধ্যে সমন্বয় আনতে কমিটি বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে।

কিন্তু গত সাড়ে তিন মাসেও আর নতুন কমিটি বা আহ্বায়ক কমিটিরও মুখ দেখেননি জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে সংগঠনটির ৯টি উপজেলা ও কলেজ পর্যায়ের কমিটিগুলো। দীর্ঘ এ সময় কমিটিহীন থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্থিরতা।

এ বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কমিটি না থাকলে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি আশা করছি, জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন কমিটি উপহার দেবে।

কমিটিবিহীন ছাত্রলীগে যেন সবাই নেতা

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহরিয়ার পারভেজ জিকো বলেন, কমিটি না থাকায় জেলা ছাত্রলীগ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আবার কেউ কেউ সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এতে ঐতিহ্যবাহী ও আদর্শিক এ সংগঠনটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যোগ্য নেতৃত্ব ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী নেতাদের নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন অতি জরুরি।

সভাপতি পদ-প্রত্যাশী সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ খাঁন জাগো নিউজকে বলেন, ওই কমিটি বিলুপ্তির সাত দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি পদ-প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত চেয়েছিল। পরে সাধারণ ছাত্রদের দাবি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশে আমি আমার জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদ-প্রত্যাশী এক ছাত্রলীগ নেতা জাগো নিউজকে বলেন, সাড়ে তিন মাস ধরে জেলা ছাত্রলীগ কাঠামোবিহীনভাবে চলায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই সুষ্ঠু ধারায় ছাত্রলীগকে ফিরিয়ে এই শাখায় কমিটি গঠন করা জরুরি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগ হচ্ছে নেতৃত্ব তৈরির কারখানা। তাই এ সংগঠনে প্রয়োজন যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্ব। যাদের হাত ধরে গড়ে উঠবে আগামীর নেতৃত্ব। আমি মনে করি বর্তমান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভালো একটি কমিটি অনুমোদন দেবে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, যোগ্য ও সাংগঠনিক নেতৃত্ব যাচাই-বাছাই এবং জাতীয় নির্বাচনের কারণে সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি গঠনে কিছুটা সময় লাগছে। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আদর্শবান ও মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে শক্তিশালী কমিটি উপহার দেওয়া হবে।

এফএ/জেআইএম