অযত্নে নষ্ট হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া অ্যাম্বুলেন্স
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জন্য অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয় ভারত সরকার। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সটি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের মার্চে বাংলাদেশে আসেন। তখন ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর ধাপে ধাপে এগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তর করে ভারত সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ডিসেম্বর মাসে এ অ্যাম্বুলেন্সটি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে দেওয়া হয়।
অত্যাধুনিক এ অ্যাম্বুলেন্সে একটি আইসিইউ পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, জরুরি ওষুধ, ইনকিউবেশন সেট, অক্সিজেন সিলিন্ডার, সাকশন মেশিন, নেবুলাইজার মেশিন, ক্যাথেটার, বিপি স্টেথো, পালস অক্সিমিটার, কার্ডিয়াক মনিটর পালস, স্যাচুরেশন, তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র, মনিটর ব্যবস্থা, পথেই রোগীর হৃদস্পন্দন ভেন্ট্রিকুলার টাকাইকার্ডিয়া (ভিটি) এবং ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন (ভিএফ) সুবিধা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পেছনে একটি টিনের ছাউনির নিচে পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সের পাশেই বাংলাদেশ-ভারতের পতাকা সংবলিত ভারতের উপহারের লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সে ধুলাবালির আস্তর জমেছে। দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন ও অবহেলায় একই জায়গায় পড়ে রয়েছে এটি। দীর্ঘদিন অ্যাম্বুলেন্সটি চালু না করাই ব্যাটারিসহ সরঞ্জাম নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ রোগীরা।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজনরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সটি এখানে অযত্নে পড়ে রয়েছে। অথচ দেখার কেউ নেই। কিছুদিন ব্যবহার হলেও জনবল সংকট ও অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হওয়ায় পরিত্যক্ত স্থানে এটি পড়ে রয়েছে। অথচ তাদেরকে অতিরিক্ত টাকায় ভাড়ায় চালিত অ্যাম্বুলেন্সে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি বাড়ছে তেমনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি যেনো রোগীদের ব্যবহারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসে।
অ্যাম্বুলেন্স চালক রোমান আহমেদ বলেন, এখানে রোগীর চাপ অনেক। হাসপাতালের তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ড্রাইভার তিনি একাই। তাই রোগী নিয়ে যখন কোথাও তিনি যান তখন আর কেউ থাকে না হাসপাতালে। সুযোগ পেয়ে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রতিনিয়ত জমজমাট ব্যবসা করছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। এজন্য তিনি জনবল বাড়ানোর কথা বলেছেন।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান গণমাধ্যমে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি হননি।
তবে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম জাগো নিউজকে বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। দীর্ঘদিন ধরেই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে রয়েছে। এভাবে পড়ে থাকলে এটি একেবারে নষ্ট হয়ে পড়বে। অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলা হবে বলেও জানান তিনি।
নাসিম উদ্দিন/এনআইবি/জেআইএম