ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাংসের দোকান বন্ধ
সরকারি দামে বিক্রি করতে চান না ব্যবসায়ীরা
গরুর মাংসের দাম বেঁধে দেওয়ায় দোকান বন্ধ রেখেছেন বিক্রেতারা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন মাংস বিক্রেতারা। তাই সোমবার শহরে মাংসের দোকান বন্ধ রাখেন তারা। দাম পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত মাংস বিক্রি বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দ বাজার, ফারুকি বাজার, মেড্ডা বাজার, মৌড়াইলের বৌ বাজার, কাউতলী বাজারসহ জেলা শহরের অন্তত অর্ধশতাধিক মাংসের দোকান বন্ধ দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার সকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে মাংসের দোকানে লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেটে গরুর মাংস ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা কেজি দরে বিক্রির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি না করার বিষয়ে তারা জানান, খামার বা ব্যাপারির কাছ থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস চামড়াসহ কিনতে হচ্ছে ৭২০ টাকা দরে। আর খুচরা পর্যায়ে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই জেলা শহরের মাংসের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- মাছ-মাংসসহ ২৯ নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিলো কৃষি অধিদপ্তর
- ম্যাজিস্ট্রেট এলে টাঙানো হয় নতুন তালিকা, কমে যায় পণ্যের দাম
মাংস ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন ও শামীম বলেন, আমরা জনগণের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই মাংস বিক্রি করি। সরকার আমাদের যে বাজার দর দিয়েছে, ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা, এই দরে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হবে। তাই মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ থাকবে।
আরেক ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, আমরা লোকসানে ব্যবসা করতে পারবো না। সরকার গরুর মাংসের যে দাম নির্ধারণ করেছে, সে দামে মাংস বিক্রি করলে লোকসান হবে। লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা সম্ভব না। তাই সকাল থেকে আমরা মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা খামারি এবং ব্যাপারি থেকে গরু কেনেন। তাদের ৭২০ টাকার মতো প্রতি কেজিতে দাম পড়ে। এ অবস্থায় সরকার ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে। তা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অবশ্যই দাম সমন্বয় করতে হবে। কারণ খামারে গরুর দাম কমাতে হবে। দাম পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে। অন্যথায় মাংসের বাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।
আরও পড়ুন:
শহরের ফারুকী বাজার আসা ক্রেতা মো. রবিউল্লাহ ও মনির মিয়া জানান, তারা বাড়ি থেকে গরুর মাংস কেনার জন্য এসেছেন। এসে দেখেন দোকান বন্ধ। রমজানে তারা এমনটা প্রত্যাশা করেননি। তারা আশা করছেন, ব্যবসায়ীরা দ্রুত সমস্যার সমাধান করে দোকান চালু করবেন।
এদিকে শহরের ফারুকী বাজারে লিফলেট বিতরণকালে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মচারী মো. পলাশ মণ্ডল বলেন, মহাপরিচালকের কার্যালয়ের নির্দেশনাক্রমে বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এর বেশি আমার জানা নেই।
মঙ্গলবার এ ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেবেন বলে জানিয়েছেন।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/জেডএইচ