জমে উঠেছে নওগাঁর ঈদ বাজার
নওগাঁয় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। শেষ সময়ে পছন্দের পোশাক পাবেন কি না এমন চিন্তা থেকে এবার আগাম জমেছে ঈদ বাজার। ক্রেতাদের পদচারণায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মুখর থাকছে বিপণিবিতানগুলো।
ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট-প্যান্ট, মেয়েদের জন্য থ্রি-পিস, ফ্রক, স্কার্ট ও শিশুদের শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি-পাজামাসহ নানা নজরকাড়া পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার বিক্রি বেশ ভালো। আর ক্রেতারা বলছেন, পোশাকের গলাকাটা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) নওগাঁ শহরের দেওয়ান বাজার, গীতাঞ্জলী শপিং কমপ্লেক্স, বসাক শপিং কমপ্লেক্স, মাজেদা সুপার মার্কেট, বিসমিল্লাহ টাওয়ার, মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেলো জমজমাট ঈদের বাজার।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাবেচা চলছে। শিশু ও তরুণীদের জন্য ফ্রক, গাউন, জিপসি, ফ্লোর টাচ, অর্গান্ডি থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, চাইনিজ পার্টি ড্রেস, ইন্ডিয়ান অরগানজা জামা বিক্রি হচ্ছে। এ বছর কিশোরী ও তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে আছে ‘আলিয়া কাট’ নামের জামা। এরপরই ‘মাসাকাল্লি’, ‘নায়রাকাট’, ‘কালামকারি’ ও ‘নবাবি’ নামের থ্রি-পিসের চাহিদা রয়েছে। পোশাকগুলো প্রকারভেদের দুই থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ছেলেরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যান্ট, শার্ট ও পাঞ্জাবি কিনছে। স্কুল-কলেজপড়ুয়াদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ‘পাঠান’ ও ‘বাহুবলী-২’ নামের পাঞ্জাবি। বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। কেউ কেউ সুতি কাপড়ের পাজামা-পাঞ্জাবিও কিনছেন। এগুলো দেড় হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শহরের কাপড়পট্টি এলাকার বীণাপাণি, গণেশ, পাবনা বস্ত্রালয়সহ কয়েকটি শাড়ির দোকান ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড়। এসব দোকানে বিভিন্ন ধরনের সিল্ক শাড়ি, সুতি কাতান, স্বর্ণ কাতান, বেনারসি, হাফ সিল্ক, জামদানি শাড়ির বিক্রি বেশি। দুই থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব শাড়ি। আর নিম্ন আয়ের ক্রেতারা কিনছেন ৮০০ থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে শাহজাদপুর ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।

সুপারিপট্টি এলাকার বিশাল ক্লথ স্টোরের বিক্রেতা এম এম মজিদ বলেন, আমাদের এখানে মেয়েদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের থ্রি-পিসের পাশাপাশি ছেলেদের পাজামা, পাঞ্জাবি ও শার্টের ছিট কাপড়ের কালেকশন রয়েছে। তৈরি পোশাকের তুলনায় এবার ছিট কাপড়ের দাম খুব একটা বাড়েনি। রমজানের শুরু থেকেই ছিট কাপড়ের বেচা বিক্রি বেশ ভালো। আগামী কয়েকদিনে আরও ভিড় বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।
দেওয়ান বাজারে জাকিয়া জেসমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, শেষ মুহূর্তে ভিড়ের কারণে এ বছর ঈদের কেনাকাটা একটু আগেই সেরে ফেলার ইচ্ছা ছিল। সে উদ্দেশে বাজারে এসে দেখি উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতার সঙ্গে কথা বলার সময়ই নেই বিক্রেতার। দাম চাইছে গলাকাটা। এর মধ্যেই মেয়ের জন্য পোশাক কিনলাম। এখনো আমার কেনাকাটা বাকি।
শহরের আসমান বিগবাজার বিপণিবিতানের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, রোজার শুরুতে ক্রেতা কিছুটা কম হলেও ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। আমাদের দোকানে পোশাকের পাশাপাশি জুতা ও প্রসাধনী বিক্রি হলেও এখন পর্যন্ত পোশাকের বিক্রিই বেশি। এ বছর দাম বেশি হলেও পোশাকের মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা সন্তুষ্ট।
মশিউর রহমান/আরএইচ/এএসএম