পাবনার সুজানগর
২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ১২
পাবনার সুজানগরে ২ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ পুলিশসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জন গুলিবিদ্ধ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ ৩ জনকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের কালিরমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- ভায়না ইউনিয়নের বাদশা প্রামাণিক (৪০), মতিন শেখ (৫০) ও আব্দুল আওয়াল (৩৫)। তাদের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া সুজানগর থানার উপপরিদর্শক মনসুরসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সুজানগরের সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর ওহাব এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও কোন্দল রয়েছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে ওহাব ও শাহীন চেয়ারম্যান দুজনই প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভায়নার কালিরমোড় এলাকায় শাহীনুজ্জামান শাহিনের সমর্থকদের সঙ্গে আব্দুল ওহাব গ্রুপের আমিন চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সামান্য বিষয় নিয়ে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং পরে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশের সঙ্গে শাহিনুজ্জামান শাহিনের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ ১২ জন আহত হয়।
ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহিনুজ্জামান শাহিনের লোকজন হামলা করেছে। আমার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে তাদের প্রতিরোধ করে।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির ওপর হামলার খবর পেয়ে সেখানে গেলে শাহিনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি করি। ঘটনাস্থল থেকে ৩ জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।
অন্যদিকে হামলার জন্য আমিন চেয়ারম্যানকে দায়ী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আব্দুল মজিদ নামের আমার এক সমর্থককে মারধর করা হয়। এ নিয়েই উত্তেজনা। পরে আমিন চেয়ারম্যান নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন সারা উপজেলায় আমার লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আজকের ঘটনা তারই অংশ। তারা পুলিশকেও মানছে না।
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে হট্টগোলে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের লোকজন ভায়না ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ঘেরাও করলে পুলিশ সেখানে যায়। কিন্তু পুলিশের ওপর চড়াও হওয়াটা দুঃখজনক। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এমএইচআর