কারুশিল্প মেলায় শাহআলমের এক শাড়ির দাম এক লাখ ২০ হাজার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ির কদর রয়েছে পুরো দেশে। একসময় রেশম ও কটন সুতায় বোনা জামদানি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এখন তা প্রায় হারানোর পথে। তবে কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী জামদানির ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনো ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে মো. শাহআলম মিয়া একজন।
এবারের কারুশিল্প ও লোকজ উৎসব মেলায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের শাড়িসহ থ্রি-পিস,পাঞ্জাবি ও বিভিন্ন মূল্যের ওড়না নিয়ে এসেছেন ৫২ বছর বয়সী এই তাঁতি। তিনি সোনারগাঁ উপজেলার ভাহারগাঁও কাজীপাড়া এলাকার মো. ফজলুল হকের ছেলে।

জানা যায়, শাহআলম মিয়া দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে জামদানি তৈরি করে আসছেন। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগের কারুশিল্প ও লোকজ উৎসবে টানা ১৮ বছর পণ্য বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জামদানি শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি আর ওড়না তৈরি করে একটি স্টলে বিক্রি করতে দেখা গেছে তাকে। গত বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা সমাগম বেশি বলে জানান এই তাঁতি।
এবারের কারুশিল্প মেলায় তার স্টলে এক হাজার ২০০ থেকে শুরু করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের জামদানি শাড়ি রয়েছে। পাশাপাশি ৪০০ টাকা থেকে ৯ হাজার মূল্যের পাঞ্জাবি, এক হাজার ২০০ থেকে ১৫ হাজারের থ্রি-পিস এবং ওড়না রয়েছে ৬০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের।

শাহআলম মিয়া জানান, জামদানি শাড়ি দুই ধরনের হয়। একটি কটন টু কটন দ্বারা সুতি জামদানি, আরেকটি রেশম আর কটন মিক্স হয়ে হাল্ফ সিল্ক শাড়ি। মূলত ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও জামদানি তৈরির দৃশ্য জনসম্মুখে তুলে ধরার লক্ষ্যে কারুশিল্প মেলায় ব্যবসা করেন তিনি। তার বোনা জামদানি শাড়ি সর্বনিম্ন ১২০০টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। ইতোপূর্বে কারুশিল্পী হিসেবে পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। সহকারী আল-আমীনের সহযোগিতায় আগে একবার কারুশিল্পের স্টলে হাতে বোনা জামদানি তৈরি করে বিক্রিও করছেন তিনি।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক এ কে এম আজাদ সরকার বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলায় কারুশিল্প প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শন, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। এরমধ্যে জামদানির চাহিদা অন্যতম। আশা করছি, এবার মেলায় জনসমাগম বেশি হবে।
এফএ/এএসএম