গ্রাহকের ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এসিসিএফ ব্যাংকের কর্মকর্তারা
এসিসিএফ ব্যাংকের গাইবান্ধার নলডাঙ্গা শাখা/ছবি-জাগো নিউজ
অধিক মুনাফার আশায় তিন শতাধিক গ্রাহক আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা রেখেছিলেন প্রায় তিন কোটি টাকা। শুরুতে মুনাফা পেলেও হঠাৎ করে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে ব্যাংকের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে উধাও হয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গায় আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স (এসিসিএফ) ব্যাংকে এমনই ঘটনা ঘটেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী তিন শতাধিক গ্রাহক।
জেলা সমবায় কার্যালয় সূত্র জানায়, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেড সমবায় প্রতিষ্ঠান হলেও তারা ব্যাংকের মতো কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এ কার্যক্রম বন্ধে সমবায় অফিস তৎপর রয়েছে।

আমানতকারীদের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নলডাঙ্গা শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল বারি, অ্যাকাউন্ট্যান্ট তাজুল ইসলাম ও সিনিয়র অফিসার বেলামিন হোসেন মিলে আমানত সংগ্রহ করেন। শুরুর দিকে মুনাফা দিলেও মাস ছয়েক আগে বন্ধ করে দেন। মূলধনও ফেরত দিচ্ছেন না।তিন মাস ধরে শাখাটি তালাবদ্ধ। ব্যবস্থাপকসহ ওই শাখা সহযোগীরা এলাকা ছাড়া। কেউ ফোন ধরছেন না।
সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গার ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় সৌদিয়া মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিমিটেডের ওই শাখাটি অবস্থিত। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটকে তালা ঝুলছে।

প্রতিষ্ঠানটি থেকে আমানত ফেরত পেতে শাখা কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করছিলেন সর্বানন্দ গ্রামের ভাঙারি ব্যবসায়ী অমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বছরপাঁচেক আগে পাঁচ লাখ টাকা আমানত রেখেছিলাম। পরে কিছু কিছু করে কিস্তিভিত্তিক টাকা তোলার পরে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা তারা আটকে দেয়। টাকা চাইলে টালবাহানা করে। একপর্যায়ে ব্যাংক বন্ধ করে উধাও হয়ে গেছে। আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।’
শুধু আমিনুলই নয়, এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন পূর্বপ্রতাপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক ফকরুল ইসলাম, বিজিবি সদস্য দিদারুল আলম ও ব্যবসায়ী নাজমুল আলমসহ অনেক আমানতকারী। তারা বলেন, তিন মাস ধরে ব্যাংক বন্ধ রেখে ব্যবস্থাপক গা ঢাকা দিয়েছেন। ফোনেও কর্মকর্তা-কর্মচারী কাউকে পাচ্ছি না।

ভবনের মালিক মোত্তালেব হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালে মাসিক সাত হাজার টাকায় ভবনের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছি। ১০ মাসের ভাড়া বাকি আছে। বকেয়া টাকা ও ফ্ল্যাট বুঝে না দিয়ে তালাবদ্ধ করে তারা উধাও হয়ে গেছে।’
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক আব্দুল বারি ২০১৬ সাল থেকে ওই শাখায় কর্মরত আছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে তার দশলিয়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জেলা সমবায় অফিসার ফরিদ উদ্দিন সরকার বলেন, আজিজ কো-অপারেটিভ গাইবান্ধায় শাখা খুলে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ওই ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রাহকদের এ ব্যাংকে লেনদেনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
এ এইচ শামীম/এসআর/জেআইএম
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ
- ২ মৃতের বাড়ি থেকে ফেরার পথে সড়কে লাশ হলেন শাশুড়ি-পুত্রবধূ
- ৩ গাজীপুরে ভাড়া ফ্ল্যাটের দরোজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার
- ৪ নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন, ইউনূসের হাত রক্তে রঞ্জিত
- ৫ ঠাকুরগাঁওয়ে সারের ডিলারশিপ বাঁচাতে পদ ছাড়লেন ইউপি চেয়ারম্যান