ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি: সচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:৩২ পিএম, ২০ জুলাই ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে- বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আগে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কখনো এ ধরনের বেকায়দায় পড়েনি। এ ধরনের পাল্টা শুল্কের ইতিহাস আগে কখনো নেই।’

রোববার (২০ জুলাই) বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাণিজ্যসচিব।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি ও টেলিযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ছাড়াও ১১টি মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে অর্থ, বাণিজ্য, খাদ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, তথ্য, আইসিটি, শিল্পমন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারও বৈঠকে অংশ নেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমাতে বাংলাদেশ কি কি পদক্ষেপ নেবে তা নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানপত্র চূড়ান্ত হচ্ছে। তবে তৃতীয় দফায় সম্ভাব্য আলোচনার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো জানায়নি মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর (ইউএসটিআর)। এ নিয়ে তৃতীয় ও চূড়ান্ত দফা আলোচনার সময়সূচি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো ই-মেইলের জবাবে আরও অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব বলেন, ১৯৪৭ এর পর থেকেই উন্নত দেশগুলোর ইতিহাস ছিল গরিব দেশগুলোকে ছাড় দেওয়া। কীভাবে তাদের বাড়তি ট্যাক্সে ছাড় দেওয়া যায়। তারপরও দেখা গেল অনেকে এটা করে না। তখন কোটা দেওয়া হলো। পরে দেখা গেল কোটায় সমস্যা হচ্ছে। এরপর কোটা তুলে দিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি মার্কেট অ্যাক্সেস দিয়ে দিল, ভ্যালু অ্যাডিশন কমিয়ে দিল।

তিনি বলেন, উন্নত দেশ তো এ ধরনের কাজ করেছে। তারা তো কখনো উচ্চ শুল্ক বসানো নিয়ে কিছু করেনি। ফলে এ অবস্থা যে বিশেষ একটা অবস্থা এটা বুঝতে হবে। আমরা মূল পজিশন পেপার দিয়ে দিয়েছি। এখন কিছু বিষয় আছে যেগুলো কান্ট্রি স্পেসিফিক। যেমন আমার দেশের জন্য যেটা সেটা তো চীন, জাপান, ভিয়েতনাম কারও জন্য না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য সংক্রান্ত ছাড় দেওয়ার সব মানসিকতা রয়েছে বাংলাদেশের। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু পণ্যেও এ দেশে প্রবেশাধিকার সহজ করা, শুল্ক ছাড় দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অ-বাণিজ্যসংক্রান্ত চুক্তি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক সংক্রান্ত একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের বিষয়ে দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনা শুরুর আগে দেশের ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন মন্ত্রণায়ের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি— বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসারত মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর শুল্কের হার কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক দফা আলোচনা করবে বাংলাদেশ। সবার মতামত নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসার প্রস্তুতি চলছে।

প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার একটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রোববার আবারও বৈঠক হয় আরও কিছু নতুন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। যেখান থেকেই বাংলাদেশের কাছে চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধা ও তাদের দেওয়া শর্ত কতটুকু মানা সম্ভব তা নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া বাণিজ্য প্রতিনিধিরা। এরপর বেশি স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যদের পরামর্শ নেওয়া হবে।

এনএইচ/এমএএইচ/