ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

বিসিআই সভাপতি

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া জাতির জন্য খুবই উদ্বেগের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

বেসরকারি খাতে দিন দিন বিনিয়োগ কমে যাওয়া জাতির জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)-এর সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।

তিনি বলেন, ‘খুব অ্যালার্মিং ফর দ্য নেশন, দিনকে দিন বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কিন্তু কমছে। ৬.২৩ শতাংশে নেমেছে অক্টোবরে, সেপ্টেম্বরে ছিল ৬.২৯ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, বেকার বাড়ছে। ১৫ শতাংশের বেশি ব্যাংক কিন্তু দেউলিয়া হয়ে গেছে। চাকরি নেই।’

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া ৮ দিনের এসএমই মেলার দ্বিতীয় দিনে ‘রপ্তানি বহুমুখীকরণ: নারী উদ্যোক্তাদের ভূমিকা ও প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

‘এসএমই শক্তি, দেশের অগ্রগতি’ স্লোগানে এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত শতভাগ দেশীয় পণ্যের এই মেলা চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে গেছে উল্লেখ করে সেমিনারে বিসিআই সভাপতি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা শুল্কের কারণে পুরো বিশ্বে এখন বড় এক ঝড় উঠতে যাচ্ছে। এই পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জের তেমনি এক বড় সুযোগও। এতদিন বিশ্ব বাণিজ্য চলতো ডব্লিউটিওর নিয়মে, সেখানে স্বল্পোন্নত দেশগুলো কিছু সুবিধা পেতো। কিন্তু এখন দেশভিত্তিক ও অঞ্চলভিত্তিক আলোচনা বাড়ছে। এতে অনেক দেশের জন্য ধাক্কা তৈরি হলেও বাংলাদেশের সামনে নতুন দরজা খুলছে। ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান—সবাই মাইনাস চায়না সোর্স খুঁজছে। এটাই বাংলাদেশের জন্য অবারিত সুযোগ।’

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি তিনটি খাতের ওপর দাঁড়িয়ে- রেমিট্যান্স, কৃষি ও গার্মেন্টস। কিন্তু এই তিন খাতই ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে না। এরই মধ্যে বিদেশে কর্মী যাওয়া কমছে। গার্মেন্টসে অটোমেশন বাড়ছে। কৃষি খাতেও প্রযুক্তি ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। তাই আমাদের নতুন খাত ধরতে হবে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ এখনই এগ্রো-বেজড ইন্ডাস্ট্রিতে শক্ত অবস্থানে যেতে পারে। ট্যুরিজম, ব্লু ইকোনমি ও হালাল গুডস—এসব খাতেও বড় বাজার আছে। হালাল গুডস ও হালাল ফুড মিলিয়ে একটি ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার। বাংলাদেশকে এ বাজার ধরতে হবে।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া জাতির জন্য খুবই উদ্বেগের

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ না দেওয়া বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সমালোচনা করে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, ব্যাংকাররা শুধু বড় গ্রাহক খোঁজেন। কিন্তু মাইক্রো ও স্মল উদ্যোক্তারা ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই ঋণ খেলাপি হয় না। তাহলে বড় উদ্যোক্তা কেন খোঁজেন। তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের শুধু অর্থ নয়—প্রযুক্তি সহায়তা, ডিজিটাল দক্ষতা, ট্রেনিং, প্যাকেজিং, ব্র্যান্ডিং—সবই দরকার।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ূব মিয়া বলেন, ১৭ বছর পরও এসএমই খাত নিয়ে একই সমস্যা রয়ে গেছে। নীতি আছে, বাস্তবায়ন নেই। দেশের অর্থনীতিকে এসএমই বান্ধব করতে আপনাদের (নারী উদ্যোক্তা) আওয়াজ তুলতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের ঋণ প্রদানের নীতি সহজ করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ালে শুধু ব্যবসাই বড় হবে না, সামগ্রিক অর্থনীতিও দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে যাবে। নারী উদ্যোক্তারা শক্তিশালী হলে দেশের জন্যও লাভ হবে। এসএমই ফাউন্ডেশন সবসময় নারী উদ্যোক্তাদের পাশে ছিল ও থাকবে। প্রয়োজন হলে যেকোনো সহায়তায় আমরা এগিয়ে আসবো।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র অধ্যাপক ড. মেলিতা মেহজাবীন। এতে আরও বক্তব্য দেন ব্যাংক এশিয়া পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হোসেন প্রমুখ।

ইএইচটি/ইএ/এমএস