বাকিতে পণ্য আমদানির ইউস্যান্স মেয়াদ পুনর্নির্ধারণ
বাংলাদেশ ব্যাংক/ফাইল ছবি
শিল্প কাঁচামাল আমদানিতে ইউস্যান্স বা বাকিতে পণ্য আমদানির সুবিধার মেয়াদ পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানি কার্যক্রম সহজ ও বাস্তবসম্মত করতে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এখন থেকে সর্বোচ্চ ২৭০ দিন অথবা ক্যাশ কনভার্সন সাইকেল- যেটি আগে শেষ হবে, সে পর্যন্ত ইউস্যান্স সুবিধায় আমদানি করা যাবে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানিয়ে সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে শিল্প কাঁচামাল, ব্যাক-টু-ব্যাক আমদানি, কৃষিযন্ত্র ও রাসায়নিক সার আমদানির ক্ষেত্রে সরবরাহকারী বা ক্রেতা ঋণের আওতায় ইউস্যান্স মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করা হয়েছিল। ওই সুবিধার মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
নতুন সিদ্ধান্তে সেই সুবিধা পুরোপুরি প্রত্যাহার না করে ব্যবসার বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সীমিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত নগদ প্রবাহ (ক্যাশ ফ্লো) পরিস্থিতির সঙ্গে মিল রেখেই এই পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইউস্যান্স হলো এমন একটি আমদানি পরিশোধ ব্যবস্থা, যেখানে পণ্য দেশে আসার পর নির্ধারিত সময় শেষে মূল্য পরিশোধ করা হয়। অর্থাৎ, পণ্য আগে আসে এবং টাকা পরে দেওয়া হয়। এতে আমদানিকারক তাৎক্ষণিক নগদ চাপ ছাড়াই কাঁচামাল ব্যবহার করে উৎপাদন ও বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পান। ব্যাংকিং পরিভাষায় একে ইউস্যান্স এলসি বলা হয়। এর বিপরীতে রয়েছে সাইট এলসি, যেখানে কাগজপত্র ঠিক থাকলে সঙ্গে সঙ্গে মূল্য পরিশোধ করতে হয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ইউস্যান্স সুবিধা দেওয়ার আগে এডি ব্যাংকগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে আমদানিকারকের ক্যাশ কনভার্সন সাইকেল বাস্তবসম্মত। অর্থাৎ, কাঁচামাল কেনা থেকে শুরু করে পণ্য বিক্রি করে নগদ অর্থ হাতে আসা পর্যন্ত যে সময় লাগে, তার সঙ্গে ইউস্যান্স মেয়াদের যৌক্তিক সামঞ্জস্য থাকতে হবে।
ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির ক্ষেত্রে ইউস্যান্স মেয়াদ নির্ধারণ করতে হবে প্রচলিত আইন অনুযায়ী রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনার নির্ধারিত সময়সীমা অনুসরণ করে। তবে আগের মতোই এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) থেকে অর্থায়িত আমদানির ক্ষেত্রে এই বাড়তি ইউস্যান্স সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনবে এবং ব্যাংক খাতের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য কার্যকর নগদ প্রবাহ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আরও বেড়ে গেলো।
ইএআর/একিউএফ