ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

প্রযুক্তিতে বাংলার ব্যবহার বাড়াতে বড় উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৭

পৃথিবীর সপ্তম শীর্ষ ভাষা বাংলার প্রযুক্তিতে ব্যবহার খুবই সামান্য। কম্পিউটারে বাংলা ভাষায় লিখতে এখনো ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কিবোর্ড লে-আউট। বহুল আকাঙ্ক্ষিত ডট বাংলা ডোমেইনের উদ্বোধন হলো এই মাত্র সেদিন। বাংলার ব্যবহার প্রত্যাশিত পর্যায়ে না পৌঁছায় বিপাকে অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত প্রযুক্তিনির্ভর মানুষ। এ অবস্থায় কম্পিউটারে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত এক প্রকল্প উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া একনেক বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে প্রকল্পটি। একনেকের অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)।

প্রকল্পের আওতায় বাংলানির্ভর নতুন ১৬টি সফটওয়্যার তৈরি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে প্রযুক্তির সম্প্রসারণ হচ্ছে ব্যাপক হারে। স্কুলশিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গ্রামের কৃষক পর্যন্ত সবার জীবন বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তির ছোয়ায়। তবে বাংলার ব্যবহার কম থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেসব সমস্যা লাঘব হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। প্রস্তাবের উপর সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা ডাকে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ। বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য মো. জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কিছু সংশোধনী সাপেক্ষে প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ ও অনুমোদন ছাড়াই অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ প্রকল্পে চলতি অর্থবছর ব্যয় হবে ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছর এ খাতে ৬৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যয় করা হবে ৭৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। সবমিলে ব্যয় দাঁড়াবে ১৫৯ কোটি দুই লাখ টাকা।

বিসিসি সূত্র জানায়, গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈশ্বিক পর্যায়ে নেতৃস্থানীয় হিসেবে বাংলা কম্পিউটিং প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। তা ছাড়া আইসিটিসহায়ক বাংলা ভাষার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রমিতকরণ করা হবে প্রকল্পের আওতায়। বাংলা কম্পিউটিংয়ের জন্য বিভিন্ন টুলস, প্রযুক্তি ও বিষয়বস্তুর উন্নয়ন করা হবে। এর আওতায় সফটওয়্যার উদ্ভাবন করা হবে ১৬টি। পরিচালণা করা হবে বিভিন্ন সমীক্ষা, জরিপ ও গবেষণা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে প্রযুক্তি খাতের উন্নতি প্রয়োজন। এর অংশ হিসেবে বিসিসি আনফো সরকার -২ ও লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স শীর্ষক দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

এতে আরও বলা হয়, সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান ব্যববহারকারী বিবেচনায় সপ্তম। এ প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি খাতে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। এ অবস্থায় বাংলায় বিভিন্ন টুলস উদ্ভাবনের লক্ষ্যে সম্প্রতি সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। সমীক্ষার সুপারিশের আলোকে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়। তবে পরিকল্পনা কমিশনের হস্তক্ষেপে পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কমে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ১৫৯ কোটি দুই লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জিয়াউল ইসলাম প্রকল্পটির বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় বাংলা ভাষা সংক্রান্ত বিভিন্ন টুলস ও সফটওয়্যার উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ হবে। এ বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।

এমএ/বিএ